শ্রীমঙ্গলে পাগলা কুকুরের কামড়ে ১ দিনে ২০ জন হাসপাতালে

কুকুরের কামড়ে আহত হয়ে হাসপাতালে এসেছেন এক ব্যক্তি। আজ শুক্রবার মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে
ছবি: প্রথম আলো

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে একটি পাগলা কুকুরের কামড় খেয়ে এক দিনে অন্তত ২০ জন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। আজ শুক্রবার দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত শ্রীমঙ্গল শহরের বিভিন্ন জায়গায় কুকুরটি মানুষজনকে আক্রমণ করেছে বলে জানিয়েছে উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস। পাগলা কুকুরকে আটক করতে শহরে তল্লাশি চালাচ্ছে তারা। কুকুর থেকে সাবধান হতে চলছে মাইকিং।

আজ সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২০ জন কুকুরের কামড়ে আহত হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। আহত ব্যক্তিরা হলেন খাইছড়া চা-বাগানের বাসিন্দা লক্ষ্মী তাঁতি (৮), ভাড়াউড়া চা-বাগানের রাত্রী উন্নেসা (২৮), উত্তরসুর এলাকার রিহাব মিয়া (১৪), মিশন রোড এলাকার বিজয় দেবনাথ (১০), মুসলিম বাগ এলাকার আল আমিন (১২), সাগরদিঘি রোডের তৃষ্ণা ঋষি (৭), মাস্টার পাড়ার আদিত্য দেব (৭), মিশন রোড এলাকার রিহান (৬), রাজু (২৫), আবদুর রহমান (২৫), লালবাগ এলাকার আবদুল আল শরীফ (৬), পশ্চিম ভাড়াউড়ার সিয়াম (১২), সবুজবাগের শ্রাবণ (৬), গোলগাঁও এলাকার মোফাজ্জল (১৩), লাহারপুর এলাকার খোকন দেবনাথ (৫০), রাধানগরের স্বপ্না বেগম (৪০), পশ্চিম ভাড়াউড়ার ইদ্রিস মিয়া (২৫), রুপসপুরের শুভাস সূত্রধর (৫০), গদারবাজারের নশাই মিয়া (৪৫) ও কালিঘাট রোডের রুবেল দাশ (২৭)।

একটি কুকুরই সবাইকে কামড় দিচ্ছে। আমরা কুকুরটিকে ধরার চেষ্টা করছি। সম্ভবত কুকুরটি পাগল হয়ে গেছে। শহরে কুকুরটি থেকে সাবধানে থাকার জন্য সবাইকে অনুরোধ করে মাইকিং করা হচ্ছে।
কর্ণ চন্দ্র মল্লিক, উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা, শ্রীমঙ্গল

কুকুরের কামড় খাওয়া একাধিক ব্যক্তি প্রথম আলোকে বলেছেন, রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় মানুষকে শহরের বিভিন্ন জায়গায় হঠাৎ এই কুকুর কামড় দিয়েছে। কুকুরটির মুখ দিয়ে লালা ঝরছিল।

আহত রুবেল দাশ প্রথম আলোকে বলেন, ‘সন্ধ্যার দিকে স্টেশনের দিকে যাচ্ছিলাম। হঠাৎ কুকুরটি এসে পায়ে কামড় বসিয়ে দিয়েছে। কামড় দিয়ে পা ছাড়তে চায়নি। পরে লাথি দিয়ে পা ছাড়াই। কুকুরটি লাথি খেয়ে পালিয়ে যায়। পরে হাসপাতালে এসে চিকিৎসা নিয়েছি। আগামীকাল টিকা নেব। এখন পায়ে খুব ব্যথা করছে।’

নাম প্রকাশ না করার শর্তে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এক নার্স বলেন, কুকুরে কামড় দিলে অনেকেই টিকা ক্লিনিক বা ফার্মেসি থেকে নিয়ে নেন। আজ ২০ জন হাসপাতালে এলেও কুকুরের কামড়ে আহতের প্রকৃত সংখ্যা হয়তো আরও বেশি।

শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা কর্মকর্তা রেদোয়ান আহসান উল্লাহ বলেন, কুকুরের কামড়ে এক দিনে অনেক রোগী এসেছেন। তাঁরা ভুক্তভোগীদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়েছেন। আগামীকাল প্রত্যেককে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে বিনা মূল্যে জলাতঙ্ক রোধে টিকা দেওয়া হবে।

শ্রীমঙ্গল উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা কর্ণ চন্দ্র মল্লিক প্রথম আলোকে বলেন, ‘একটি কুকুরই সবাইকে কামড় দিচ্ছে। আমরা কুকুরটিকে ধরার চেষ্টা করছি। সম্ভবত কুকুরটি পাগল হয়ে গেছে। শহরে কুকুরটি থেকে সাবধানে থাকার জন্য সবাইকে অনুরোধ করে মাইকিং করা হচ্ছে।’