ধর্ষণ মামলায় সন্তানের বাবার স্বীকৃতি মিলল, আসামির যাবজ্জীবন

কারাগার
প্রতীকী ছবি

বিয়ের কথা বলে দীর্ঘদিন ধরে এক নারীকে ধর্ষণ করে আসছিলেন রফিকুল ইসলাম ঢালী। পরে ওই নারী অন্তঃসত্ত্বা হলে বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানান তিনি। গর্ভের ওই সন্তানকে নিজের নয় বলে দাবিও করে আসছিলেন রফিকুল। সন্তানের বাবা স্বীকৃতির দাবিতে ওই নারী থানায় ধর্ষণের মামলা করেন। ঘটনাটি ২০০৯ সালের।

দীর্ঘ ১৩ বছর মামলাটি চলার পর আদালত রায় দিয়েছেন ওই নারীকে ধর্ষণ করেছিলেন রফিকুল ইসলাম। আর ওই নারীর সন্তানটির বাবা রফিকুল। ডিএনএ পরীক্ষায় রফিকুলের সঙ্গে ওই ছেলেসন্তানের ডিএনএর মিল পাওয়া গেছে। আদালত রায়ে ওই সন্তানকে রফিকুলের ছেলে হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছেন। সেই সঙ্গে ধর্ষণের দায়ে রফিকুলকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, ২০ হাজার টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে আরও ছয় মাসের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে এই রায় ঘোষণা করেন খুলনা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩ এর বিচারক আবদুস সালাম খান।

মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ফরিদ আহমেদ বলেন, এটি একটি যুগান্তকারী রায়। ওই নারী শুধু ওই সন্তানের বাবার স্বীকৃতি আদায়ে এত বছর লড়ে গেছেন। সর্বশেষ গত ২৬ জুনের ডিএনএ পরীক্ষায় রফিকুলের সঙ্গে ওই ছেলের ডিএনএর মিল পাওয়া গেছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ধর্ষণের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আদালত এই রায় ঘোষণা করেছেন।

মামলার সংক্ষিপ্ত নথি থেকে জানা যায়, রফিকুল ইসলাম ও ধর্ষণের শিকার ওই নারী খুলনার বাসিন্দা। পাশাপাশি থাকতেন তাঁরা। ওই নারীকে বিয়ে করার কথা বলে ২০০৯ সালের ২৬ আগস্ট থেকে একই বছরের ১৬ অক্টোবর পর্যন্ত একাধিকবার ধর্ষণ করেন রফিকুল। একপর্যায়ে ওই নারী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে রফিকুলকে বিয়ের জন্য চাপ দিতে থাকেন। এতে রফিকুলও ওই নারীকে নানাভাবে হুমকি দেন। একপর্যায়ে রফিকুলকে আসামি করে সোনাডাঙ্গা থানায় ধর্ষণ মামলা করেন ওই নারী। ২০১০ সালের ২৬ জানুয়ারি ওই থানার তৎকালীন উপপরিদর্শক শফিকুল ইসলাম রফিকুলকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন।

বাদীপক্ষের আইনজীবী ফরিদ আহমেদ বলেন, এ রায়ে বাদী সন্তুষ্ট। রায় ঘোষণায় বিলম্ব হওয়ায় ওই নারী আরেক জায়গায় বিয়ে করেছেন। সেখানেই তাঁর ওই সন্তান লালনপালন করছেন। বর্তমানে ওই ছেলে একটি স্কুলের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র।