অবশেষে সেই ফারজিনাদের জন্য ঘর নির্মাণের কাজ শুরু

শিশুশিল্পী ফারজিনার পরিবারের জন্য ঘর নির্মাণে জমির মাপজোখ করছেন প্রশাসনের কর্মকর্তারা। আজ বুধবার দুপুরে সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার লাকমা গ্রামেছবি: প্রথম আলো

জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পাওয়া সুনামগঞ্জের শিশুশিল্পী ফারজিনা আক্তারের পরিবারের জন্য ঘর নির্মাণের প্রাথমিক কাজ শুরু হয়েছে। আজ বুধবার দুপুরে জেলার তাহিরপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী লাকমা গ্রামে সরকারের পক্ষ থেকে দেওয়া জমিতে ওই ঘর নির্মাণের কাজ শুরু হয়।

প্রথম আলোয় গতকাল মঙ্গলবার ‘ঘর না পেয়ে এলাকা ছাড়ল সেই ফারজিনাদের পরিবার’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশের পর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাশেদ ইকবাল চৌধুরী ফারজিনার বাবা মো. সায়েমকে তাঁর কার্যালয়ে ডেকে নেন। এরপর সেখান থেকেই সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন বুধবার থেকে ঘর নির্মাণের কাজ শুরু করার।

আরও পড়ুন

আজ দুপুরে তাহিরপুর উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের দায়িত্বে থাকা তৌফিক আহমদ, তাহিরপুর উপজেলার প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মো. মহিবুর ইসলাম, স্থানীয় টেকেরঘাট অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্পের উপপরিদর্শক মো. হেলাল উদ্দিন, ইউনিয়ন ভূমি উপসহকারী কর্মকর্তা রুহুল আমিন ও ফারজিনার বাবা মো. সায়েম সেখানে যান। প্রাথমিক কাজ শুরুর সময়ে স্থানীয় এক বাসিন্দা দাবি করেন, যে জমিটি ফারজিনার পরিবারকে দেওয়া হয়েছে, সেখানে তাঁর জমি রয়েছে। এ কারণে তিনি কাজে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেন। পরে প্রশাসনের কর্মকর্তারা তাঁর কাগজপত্র নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে দেখা করতে বলেন। এরপর তাঁরা জমিটি মাপজোখ করে ঘরের স্থান নির্ধারণর পর কাজ শুরু করেন।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. মহিবুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা কাজ শুরু করে মিস্ত্রিকে সব বুঝিয়ে দিয়ে এসেছি। এখন নির্মাণসামগ্রী নিয়ে বাকি কাজ দ্রুত শেষ করা হবে।’

আরও পড়ুন

সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওরের দুর্গম ছিলানী তাহিরপুর গ্রামের হতদরিদ্র পরিবারের মেয়ে ফারজিনা আক্তার (৯)। তাদের জমিজিরাত ও ঘর নেই। ২০২২ সালে মুক্তি পাওয়া ‘কুড়া পক্ষীর শূন্যে উড়া’ সিনেমায় অভিনয় করে শিশুশিল্পী শাখায় জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়ে আলোচনায় আসে ফারজিনা। গত বছরের ১৪ নভেম্বর ঢাকায় প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে ফারজিনা পুরস্কার গ্রহণ করে। ওই সময় প্রথম আলোয় ‘শিশুটি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের টাকায় বাড়ি করতে চায়’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এরপর ফারজিনার পরিবারকে সরকারিভাবে একটি ঘর দেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশনায় তার পরিবারকে ১০ লাখ টাকার পারিবারিক সঞ্চয়পত্রের ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়।

তাহিরপুর উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পরবর্তী সময়ে উপজেলার সীমান্তবর্তী বড়ছড়া মৌজার লাকমা গ্রামে ফারজিনার পরিবারকে ১৭ শতাংশ জমি দেওয়া হয়। ওই জমিতে একটি ঘর করে দেওয়ার জন্য সমাজসেবা কার্যালয়ের অনুকূলে ২ লাখ ৮৪ হাজার ৫০০ টাকা বরাদ্দ করা হয়। কিন্তু সাড়ে চার মাসেও মাথা গোঁজার ঘর আর হয়নি। ঘরের জন্য সংশ্লিষ্টদের কাছে ঘুরতে ঘুরতে হতাশ হয়ে পড়েন ফারজিনার বাবা মো. সায়েম। এরপর ক্ষোভে-অভিমানে পুরো পরিবার নিয়ে সোমবার সুনামগঞ্জ থেকে সিলেটে চলে যান তিনি। মো. সায়েম শ্রমিকের কাজ করেন। তাঁর দুই মেয়ে ও এক ছেলে। এর মধ্যে ফারজিনা বড়।

আরও পড়ুন