চার মেয়ের জন্ম দেওয়ায় স্বামীর ‘নির্যাতন’, গৃহবধূর ‘আত্মহত্যা’

সুনামগঞ্জ জেলার মানচিত্র

সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলায় শিপা বেগম (২৯) নামের এক নারীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যার পর সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়।

শিপা বেগমের মা মনু বেগমের অভিযোগ, পরপর চার মেয়ের জন্ম দেওয়ায় তাঁর মেয়েকে নির্যাতন করতেন স্বামী। নির্যাতন সইতে না পেরে শিপা বিষপানে আত্মহত্যা করেছেন। এ ঘটনায় আজ শনিবার সকালে সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন তিনি।

মা মনু বেগম প্রথম আলোকে বলেন, ‘ছেলেসন্তানের জন্ম হয় না বলে প্রায়ই আমার মেয়েকে শারীরিক নির্যাতন করত তার স্বামী সুমন মিয়া। ধার নেওয়া টাকা ফেরত চাওয়ায় আরও বেপরোয়া হয়ে নির্যাতন করা হতো। সন্তানদের কথা চিন্তা করে আমার মেয়ে সব সহ্য করত। তাকে শারীরিক–মানসিক নির্যাতন করে বিষ পান করতে বাধ্য করা হয়েছে। আমি মেয়ে হত্যার বিচার চেয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ করেছি।’

পুলিশ ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২০১২ সালে জগন্নাথপুর পৌর শহরের ইকড়ছই এলাকার মকদ্দুছ মিয়ার মেয়ে শিপা বেগমের সঙ্গে মীরপুর ইউনিয়নের বড়কাপন গ্রামের সুমন মিয়ার পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের প্রথম বছরেই তাঁদের প্রথম মেয়ের জন্ম হয়। দ্বিতীয় মেয়ের জন্মের পর ঝামেলা শুরু হয়। একটি ছেলেসন্তানের আশায় তাঁদের ঘরে আরও দুটি মেয়ের জন্ম হয়। এতে সুমন ক্ষিপ্ত হয়ে প্রায়ই স্ত্রীকে শারীরিক নির্যাতন করতেন।

বছরখানেক আগে নির্যাতন থেকে মুক্তি পেতে শিপা বেগম ব্যবসার কথা বলে তাঁর স্বামীর জন্য মায়ের কাছ থেকে দুই লাখ টাকা ধার আনেন। কিছুদিন আগে ধারের টাকা সুমন মিয়ার কাছে ফেরত চাওয়া হলে শিপা বেগমের ওপর নির্যাতন শুরু হয় বলে পরিবারের অভিযোগ।

জগন্নাথপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, শিপা বেগমের লাশ সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আছে। সেখানে ময়নাতদন্তের পর লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে তদন্ত করছে।