ছাত্রলীগ নেতার নির্যাতনের অভিযোগ তদন্তে কমিটির কাজ শুরু

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
ফাইল ছবি

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীকে কক্ষে আটকে রেখে ছাত্রলীগ নেতার মারধর ও চাঁদাবাজির অভিযোগ নিয়ে তদন্ত কমিটি কাজ শুরু করেছে। তিন সদস্যের ওই কমিটির কাজ শুরুর বিষয়টি আজ রোববার প্রথম আলোকে জানিয়েছেন কমিটির আহ্বায়ক সহকারী প্রক্টর এবং তড়িৎ ও বৈদ্যুতিক প্রকৌশল বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আরিফুর রহমান।

আরিফুর রহমান বলেন, তাঁদের তদন্ত মূলত শুক্রবার থেকে শুরু হয়েছে। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে আজ থেকে পুরোদমে কাজ শুরু করেন তাঁরা। ইতিমধ্যে অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বাদী ও বিবাদীকে চিঠি পাঠানো হয়েছে। চিঠি আজকের মধ্যে তাঁদের কাছে পৌঁছাবে।

তদন্ত কমিটিতে সদস্য হিসেবে আরও আছেন সহকারী প্রক্টর ও ফার্মেসি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আল মামুন এবং ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক জহুরুল আনিস।

তদন্ত কীভাবে এগোবে, সে বিষয়ে আরিফুর রহমান বলেন, উভয় পক্ষের বক্তব্য নেওয়া হবে। এ ছাড়া মতিহার হলের ওই কক্ষের আশপাশের কোনো কক্ষের শিক্ষার্থীদের ও বাদী পক্ষের সাক্ষীদের বক্তব্য নেওয়া হবে। বাদী ও বিবাদীর মুঠোফোন কথোপকথনে যা পাওয়া যাবে, সেটিও তদন্তে তাঁরা কাজে লাগাবেন। দ্রুত সময়ের মধ্যেই প্রতিবেদন জমা দেবেন বলে জানান তিনি।

আরও পড়ুন

এর আগে গত শুক্রবার বেলা ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত কক্ষে আটকিয়ে মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী সামছুল ইসলাম। তিনি ওই হল শাখার ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এবং শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ভাস্কর সাহার বিরুদ্ধে গত শুক্রবার রাতেই ছাত্র-উপদেষ্টা ও প্রক্টর দপ্তর বরাবর অভিযোগ দেন।

লিখিত অভিযোগে সামছুল বলেন, শুক্রবার বেলা তিনটার দিকে মতিহার হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ভাস্কর সাহা তাঁকে ফোন করে হলের দ্বিতীয় তলার একটি কক্ষে ডেকে নেন। সেখানে ভাস্করের সঙ্গে আরও দুজন ছিলেন। ভাস্করের কক্ষে যাওয়ার পর তিনি তাঁর কাছে চাঁদা দাবি করেন। একপর্যায়ে গলায় ছুরি ধরে মানিব্যাগে থাকা ২০ হাজার টাকা কেড়ে নেন। সে সময় আরও ছয় হাজার টাকা দাবি করলে বিষয়টি সামছুল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও সাংবাদিকদের অবহিত করবেন বলে তাঁদের জানান। এ কথা শুনে ভাস্করসহ বাকি দুজন রড ও স্টাম্প দিয়ে বেধড়ক মারধর করেন শামছুলকে। একপর্যায়ে ছাত্রলীগের ভাস্কর তাঁকে হুমকি দিয়ে বলেন, ‘কাউকে বললে আবরারের যে অবস্থা হয়েছে, সে অবস্থা হবে।’

পরে শুক্রবার রাতে সামছুল ইসলামের অভিযোগের পর তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। পাশাপাশি ভুক্তভোগী সামছুলকে প্রাধ্যক্ষের জিম্মায় হলে পাঠানো হয়। এ ঘটনার পর ছাত্রলীগ নেতা ভাস্কর সাহা হলেই অবস্থান করছেন। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী সামছুলও তাঁর কক্ষে অবস্থান করছেন। গতকাল শনিবার রাতে সামছুলের কক্ষে গিয়ে দেখা যায়, তিনি ঘুমাচ্ছেন। তাঁর ছোট ভাই জুবায়ের তাঁর সঙ্গে ওই কক্ষে অবস্থান করছেন। ঘুম থেকে ওঠার পর সামছুল বলেন, মারধরসহ পুরো ঘটনায় মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন তিনি। স্বাভাবিক হওয়ার চেষ্টা করছেন। এ জন্য মুঠোফোন বন্ধ রেখেছেন।