কুয়াকাটা সৈকত থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে দোকানপাট

পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সৈকত এলাকায় পর্যটকেরা যাতে না নামেন সেজন্য এভাবে লাল নিশানা উড়িয়েছে মহিপুর থানা পুলিশ
ছবি: প্রথম আলো

ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাবে কুয়াকাটাসংলগ্ন বঙ্গোপসাগর উত্তাল হয়ে পড়েছে। এ পরিস্থিতিতে পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকতে গতকাল শুক্রবার কিছুসংখ্যক পর্যটক থাকলেও আজ শনিবার পুরোপুরিই ফাঁকা। আজ সকালে সৈকতের ভ্রাম্যমাণ দোকানপাট সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এমনকি বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের বাইরে থাকা আবাসিক হোটেলে থাকা পর্যটকদের বাঁধের ভেতরের আবাসিক হোটেলে চলে আসার নির্দেশ দিয়েছে কুয়াকাটা পর্যটন পুলিশ।

আজ বিকেলে কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকতে দাঁড়িয়ে দেখা যায়, সমুদ্রের ভেতর থেকে উঠে আসা তিন থেকে চার ফুট উচ্চতার ঢেউ আছড়ে পড়ছে কিনারায়। এ সময় কুয়াকাটার জিরো পয়েন্টে মানুষজনকে সতর্ক করছিলেন পটুয়াখালী-৪ (কলাপাড়া-রাঙ্গাবালী) আসনের সংসদ সদস্য মো. মহিব্বুর রহমান। কথা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমি দুদিন ধরে কুয়াকাটাসহ সাগর পারের ধুলাসার, মহিপুর ও গঙ্গামতি এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছি। মানুষজনকে নিরাপদ স্থানে যেতে বলেছি। দুর্দশাগ্রস্ত মানুষজনকে শুকনা খাবারসহ প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করে যাচ্ছি।’

সাগর থেকে ফুসে ওঠা ঢেউয়ের শোঁ শোঁ শব্দে কিছুটা আতঙ্কে আছেন কুয়াকাটা, লতাচাপলী ও গঙ্গামতির বাসিন্দারা। সৈকত পারের চা–বিক্রেতা আলম হাওলাদার বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় মোখার কারণে সৈকত থেকে দোকানপাট সরাতে হয়েছে। কারণ, দুর্যোগের প্রথম ধাক্কাটা মূলত আমাদের ওপরই আসে। এর আগে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ে সাগরের ঢেউয়ের ঝাপটায় আমার দোকান ভেঙে যায়। সৈকতে ফেলে আসা দোকানটির এবারও জানি না কী হয়।’

লতাচাপলী ইউনিয়নের ঘূর্ণিঝড় প্রস্ততি কর্মসূচির (সিপিপি) দলনেতা মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘সিপিপি থেকে আমরা মাইকে বারবার সতর্কবার্তা জানিয়ে দিচ্ছি। সবাই যাতে আশ্রয়কেন্দ্রে যান, সে ব্যাপারে আমাদের স্বেচ্ছাসেবকেরা কাজ শুরু করেছেন।’
কুয়াকাটার হোটেল-মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোতালেব শরীফ বলেন, ‘গতকাল কিছু পর্যটক কুয়াকাটায় এলেও আজ সকালে কুয়াকাটা ছেড়েছেন সবাই। যে কারণে হোটেল–মোটেলের রুম ফাঁকা পড়ে আছে। আমরা স্থানীয় মানুষজনকে আশ্রয় দেওয়ার জন্য উপজেলা প্রশাসনের নির্দেশে প্রায় ২০০ আবাসিক হোটেল প্রস্তুত করেছি।’

কুয়াকাটা পর্যটন পুলিশের পরিদর্শক হাসনাইন পারভেজ বলেন, ‘আজ দুপুরের দিকে পর্যটকসহ স্থানীয় কিছু মানুষ সাগরে গোসল করতে নামেন। সাগর উত্তাল থাকায় তাঁদের আমরা সাগর থেকে উঠিয়ে দিয়েছি। তা ছাড়া স্পিডবোট, ওয়াটার বাইক সাগর থেকে কিনারায় ফিরিয়ে এনেছি। এককথায় কুয়াকাটা সৈকতসহ পাশের এলাকায় লোকজন যাতে ঘোরাঘুরি না করে সেই ব্যবস্থা নিয়েছি।’