‘ডামি’ প্রার্থী কারা, ব্যাখ্যা দিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আবদুর রহমান

ফরিদপুরে জেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রহমান। রোববার দুপুরে শহরের আলীপুর মহল্লায় দলীয় কাযালয়ে
ছবি: প্রথম আলো

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও ফরিদপুর-১ (বোয়ালমারী-আলফাডাঙ্গা-মধুখালী) আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আবদুর রহমান বলেছেন, ‘ডামি প্রার্থী এবং স্বতন্ত্র বা বিদ্রোহী প্রার্থী এক নয়। প্রধানমন্ত্রী যে ডামি প্রার্থী রাখতে বলেছেন, সেটা সব জায়গায় নয়। যেসব আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছাড়া অন্য কেউ মনোনয়নপত্র জমা না–ও দিতে পারেন, এমনটি অনুমেয় হলে সংশ্লিষ্ট আসনের নৌকার প্রার্থী নিজ দলের কাউকে প্রার্থী মনোনীত করবেন, এমনটাই বোঝানো হয়েছে।’

ফরিদপুরে জেলা আওয়ামী লীগের এক বর্ধিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। আজ শনিবার দুপুর ১২টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত শহরের আলীপুর মহল্লায় দলীয় কার্যালয়ে এ বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়।

আবদুর রহমান বলেন, প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যকে ভিন্নভাবে উপস্থাপন করে কেউ কেউ স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নৌকাকে পরাজিত করতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন। এটা দলীয় শিষ্টাচারের মধ্যে পড়ে না। তাঁরা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করছেন।

গণভবনে দলীয় প্রধানের দেওয়া বক্তব্যের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘সেদিন গণভবনে কী ঘটেছিল। আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী সবাই শেখ হাসিনাকে বলেছিলেন, “আমরা আপনার ওপরই দায়িত্ব দিলাম।” তখন প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, “আমি যাঁকে মনোনয়ন দেব, আপনারা সবাই তাঁর পক্ষে কাজ করবেন। তবে কেউ যদি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন, তাহলে তাঁর খবর আছে। ডামি প্রার্থী দাঁড় করিয়ে নির্বাচন করতে হবে।”’

আবদুর রহমান আরও বলেন, ডামি প্রার্থী এক জিনিস আর স্বতন্ত্র ও বিদ্রোহী প্রার্থী আরেক জিনিস। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে অনেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে তাঁরা নাচছেন। যাঁরা নাচার, তাঁরা এমনিতেই নাচতেন। এখন একটা অছিলা নিয়ে নাচছেন। বিভিন্ন জায়গায় ডাল-চাল খেয়ে বেড়াচ্ছেন।

জেলা আওয়ামী লীগের নেতাদের উদ্দেশে আবদুর রহমান বলেন, ‘ডামি প্রার্থীর নামে যাঁরা স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন, তাঁদের কর্মকাণ্ডের ছবি সংগ্রহ করুন। ১৭ তারিখ মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন। এর মধ্যে তাঁরা মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার না করলে ১৮ বা ১৯ ডিসেম্বর জেলা আওয়ামী লীগের নেতারা সীমিত আকারে হলেও বসে তাঁদের বহিষ্কারের সুপারিশ করে কেন্দ্রে পাঠান। কেন্দ্রের ওই সভায় সৌভাগ্যবশত হোক আর দুর্ভাগ্যবশত হোক, আমি থাকব। আপনাদের সুপারিশ কীভাবে পাস করা যায়, আমি দেখব।’

পরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আবদুর রহমান বলেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে যাঁরা নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন, দলে পদ-পদবি থাকলে তাঁদের বহিষ্কার করা হবে। যাঁদের পদ নেই, তাঁরা কোনো দিন আওয়ামী লীগ করতে পারবেন না। তিনি বলেন, ডামি প্রার্থী মানে এই না তাঁকে দিয়ে দলীয় প্রার্থীকে হারাতে হবে। ডামি প্রার্থী হবে দলীয় প্রার্থীর ইচ্ছামতো, যেখানে তিনি ছাড়া অন্য কোনো প্রার্থী নেই। ফরিদপুরের চারটি আসনে আওয়ামী লীগের কোনো ডামি প্রার্থী নেই। এ সময় স্বতন্ত্র প্রার্থীদের চাপ দেওয়া হচ্ছে না বলে জানান তিনি।

জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ফরিদপুর-৩ (সদর) আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী শামীম হকের সভাপতিত্বে বর্ধিত সভায় অন্যান্যের মধ্যে ফরিদপুর-২ (সালথা-নগরকান্দা) আসনের প্রার্থী ও বর্তমান সংসদ সদস্য শাহদাব আকবর, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহ মো. ইশতিয়াক, বোয়ালমারী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এম মোশাররফ হোসেন, সালথা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. ফকির মিয়া প্রমুখ বক্তব্য দেন।