নারায়ণগঞ্জে নারী শ্রমিকের মৃত্যুতে দুই ঘণ্টা মহাসড়ক অবরোধ সহকর্মীদের

নারায়ণগঞ্জে নারী শ্রমিকের মৃত্যুতে দুই ঘণ্টা মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে সহকর্মীরা। আজ সোমবারছবি : প্রথম আলো

নারায়ণগঞ্জের বন্দরে এক নারী শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনায় একটি পোশাক কারখানার শ্রমিকেরা দুই ঘণ্টা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন। আজ সোমবার সকাল সাড়ে দশটা থেকে দুপুর সাড়ে বারোটা পর্যন্ত ‘লারিস ফ্যাশন’ নামের প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকেরা উপজেলার মদনপুর এলাকায় সড়ক অবরোধ করেন। এতে চট্টগ্রামমুখী লেনে প্রায় কয়েক কিলোমিটার এলাকায় যানজটের সৃষ্টি হয়। ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীরা।

মারা যাওয়া শ্রমিকের নাম রিনা আক্তার (৩০)। তিনি কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার দুলাল হোসেনের মেয়ে। লারিস ফ্যাশনের সুইং সেকশনে মেশিন অপারেটর হিসেবে কাজ করতেন রিনা।

শ্রমিকদের অভিযোগ, রোববার অসুস্থবোধ করলে রিনা কারখানা কর্তৃপক্ষের কাছে ছুটির আবেদন করেন। কিন্তু কর্তৃপক্ষ তা নামঞ্জুর করে তাঁকে কাজ চালিয়ে যেতে বাধ্য করে। পরে কর্মস্থলেই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে সহকর্মীরা তাঁকে প্রথমে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানকার চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

অসুস্থ অবস্থায়ও ছুটি না দেওয়ায় মৃত্যুর জন্য কারখানা কর্তৃপক্ষকে দায়ী করছেন শ্রমিকেরা। তাঁরা দোষীদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে আন্দোলনে নামেন। সড়ক অবরোধের কারণে মহাসড়কের চট্টগ্রামমুখী অংশে যানবাহন আটকে পড়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে ক্ষতিপূরণ ও দোষীদের বিচারের আশ্বাস দিলে শ্রমিকেরা অবরোধ তুলে নেন।

অভিযোগের বিষয়ে লারিস ফ্যাশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শিমুল বলেন, ‘আমাদের এক নারী শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পড়লে তাৎক্ষণিকভাবে তাঁকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে ঢাকা মেডিকেলে নেওয়ার পর তাঁর মৃত্যু হয়। এখানে কারও কোনো গাফিলতি ছিল না। আমরা সব রকম সহযোগিতা করেছি। মৃত্যুর পর দাফনসহ পরিবারের সহায়তার ব্যবস্থাও নিয়েছি। শ্রমিকদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ওই ফ্লোরের দায়িত্বপ্রাপ্তদের বরখাস্ত করার সিদ্ধান্তও নিয়েছি। কিন্তু তারপরও তাঁরা আন্দোলনে নেমেছেন।’

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লিয়াকত আলী বলেন, অসুস্থ হয়ে নারী শ্রমিকের মৃত্যুর পর সহকর্মীরা মহাসড়ক অবরোধ করেছিলেন। তাঁদের অভিযোগ, কারখানা কর্তৃপক্ষের অবহেলায় ওই শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে শ্রমিকেরা অবরোধ তুলে নেন। এরপর যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।