হবিগঞ্জে হত্যাকাণ্ডের ২১ বছরের মাথায় ৭ জনের মৃত্যুদণ্ড, ১০ জনের যাবজ্জীবন

আদালতপ্রতীকী ছবি

হবিগঞ্জ সদর উপজেলার হুরগাঁর গ্রামে হারুন আহমেদ (৪৫) হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় করা মামলায় সাতজনের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। আজ মঙ্গলবার বিকেল পাঁচটায় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক আজিজুল হক এ রায় দেন। একই সঙ্গে আরও ১০ আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

মৃত্যুদণ্ড পাওয়া আসামিরা হলেন সদর উপজেলার হুরগাঁও গ্রামের জালাল মিয়া (৪৮), মিলন মিয়া (৫১), ফজল মিয়া (৪৭), রফিক মিয়া (৪৫), কুতুব উদ্দিন (৪৬), আব্বাস উদ্দিন (৫০) ও জাকির হোসেন (৪৭)।

যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পাওয়া আসামিরা হলেন সায়েদ আলী (৬০), মিজাজ আলী (৬০), মতলিব মিয়া (৬২), কুতুব উদ্দিন (৬০), কালাম মিয়া (৪০), জিয়াউর রহমান (৪০), আয়াত আলী (৩৮), ইসহাক আলী (৫০), জজ মিয়া (৬০) ও ইব্রাহিম আলী (৬৫)। এর মধ্যে আসামি আয়াত আলী পলাতক। মোট ৪৭ জন আসামির মধ্যে ১৭ জনের সাজা হয়েছে। মামলা চলাকালে ৮ আসামির মৃত্যু হয়েছে। ২২ জন মামলা থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন। হবিগঞ্জ জজ আদালতের অতিরিক্ত সরকারি কৌঁসুলি সালেহ আহমেদ রায়ের বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন।

মামলার সংক্ষিপ্ত এজাহার সূত্রে জানা গেছে, হুরগাঁও গ্রামের হারুন আহমেদের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে একই গ্রামের বাসিন্দা ও তৎকালীন ইউপি সদস্য মিলন মিয়ার সঙ্গে বিরোধ চলে আসছিল। ২০০৩ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি সকালে হারুন রাজিউড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ফজলুল করিমের সঙ্গে দেখা করতে বাড়ি থেকে বের হন। তখন বাড়ির অদূরে যেতেই আগে থেকে ওত পেতে থাকা আসামিরা তাঁকে ঘিরে ধরে দেশি অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে হত্যা করেন।

ঘটনার দিন রাতেই নিহতের ছোট ভাই সুমন আহমেদ বাদী হয়ে ইউপি সদস্য মিলন মিয়াসহ ৪৭ জনকে আসামি করে সদর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। পরে ২০০৩ সালের ১৮ আগস্ট আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। ২১ বছর পর আজ বিকেলে আদালত ১৭ জনের বিরুদ্ধে রায় ঘোষণা করেন। দণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে পলাতক আয়াত আলী ছাড়া সবাই উপস্থিত ছিলেন।

মামলার বাদী সুমন আহমেদ ও তাঁর পরিবার আদালতের রায়ে খুশি। সুমন আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘মামলার রায়ের জন্য আমাদের ২১ বছর অপেক্ষা করতে হয়েছে। এখন দ্রুত রায় কার্যকর হলেই আমরা খুশি।’ নিহতের ছেলে রাহাত আহমেদ বলেন, ‘বাবার স্মৃতি কিছুই মনে নেই। আমার বয়স যখন সাত বছর, তখন বাবাকে হত্যা করা হয়। আজ রায়ের সময় আদালতে উপস্থিত ছিলাম।’