বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলিতে নিহত নূরে আলম কন্যাসন্তানের বাবা হয়েছেন

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলিতে নিহত নূরে আলম সিদ্দিকীর স্ত্রী কন্যাসন্তানের জন্ম দিয়েছেনছবি: প্রথম আলো

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলিতে নিহত ময়মনসিংহের গৌরীপুরের নূরে আলম সিদ্দিকী (রাকিব) কন্যাসন্তানের বাবা হয়েছেন। আজ রোববার ভোরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিহত নূরে আলমের স্ত্রী সাদিয়া আক্তার কন্যাসন্তানের জন্ম দেন।

গতকাল শনিবার বিকেলে সাদিয়া আক্তার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। আজ ভোরে স্বাভাবিকভাবে কন্যাসন্তানের জন্ম দিয়েছেন তিনি। নবজাতক ও তার মা সুস্থ থাকায় আজ বেলা আড়ইটার দিকে হাসপাতাল থেকে তাদের ছুটি দেওয়া হয়েছে। পরে তারা বাড়িতে চলে যায়।

নূরে আলমের বাবা আবদুল হালিম মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, নবজাতককে নিয়ে পুত্রবধূ তাঁর বাবার বাড়িতে গেছেন। সেখানে কিছুদিন থাকার পর তাঁদের বাড়িতে আনা হবে। তিনি বলেন, ‘এতিম হইয়া মাইয়াডা জন্ম নিল। আমি একমাত্র পুত হারাইয়া কষ্টে দিনগুলা পার করতাছিলাম। আমার পুতের চিহ্ন এই শিশু দেইখ্যা আমার কইলজাডা ফাইট্টা যাইতাছে।’

নূরে আলম সিদ্দিকী বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গত বছরের ২০ জুলাই গুলিতে নিহত হন। অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীর জন্য গৌরীপুর উপজেলার কলতপাড়া বাজারে ওষুধ আনতে গিয়ে পুলিশ ও আন্দোলনকারীদের মধ্যে সংঘর্ষ চলাকালে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান নূরে আলম। তিনি উপজেলার রামগোপালপুর ইউনিয়নের দামগাঁও মধ্যপাড়া গ্রামের আবদুল হালিমের ছেলে। দুই বোন ও এক ভাইয়ের মধ্যে ছোট ছিলেন নূরে আলম। তিনি একটি মহিলা মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করতেন। ছেলে হত্যার ঘটনায় আবদুল হালিম বাদী হয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মামলা করেছেন।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলিতে নিহত নূরে আলম সিদ্দিকী
ছবি: সংগৃহীত

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ময়মনসিংহের অন্যতম সমন্বয়ক আশিকুর রহমান আজ দুপুরে ফেসবুকে লেখেন, ‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শহীদ নূরে আলম প্রথম কন্যাসন্তানের বাবা হয়েছেন। দোয়া করি মা, তোমার বাবার মতোই সাহসী বীর হও, আল্লাহ তোমার সহায় হোক।’

জানতে চাইলে আশিকুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীর জন্য ওষুধ আনতে গিয়েছিলেন নূরে আলম। পরে আন্দোলনে যোগ দিয়ে ছাত্র-জনতার ওপর ফ্যাসিস্ট সরকার বাহিনীর গুলির সামনে বুক পেতে দিয়ে মৃত্যুকে সাহসের সঙ্গে বরণ করে নেন। তিনি আরও বলেন, ‘নবজাতক শিশুটিকে আমাদের পরিবারের সদস্য হিসেবে গ্রহণ করে নিয়েছি। শিশুটিকে তার বেড়ে ওঠায় সব ধরনের সহযোগিতা আমাদের পক্ষ থেকে থাকবে। আমরা চেষ্টা করব, যতটুকু সম্ভব তার বাবার অভাব যেন পূরণ করতে পারি।’