জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ‘আমরা চেয়েছিলাম চাঁদাবাজমুক্ত, বৈষম্যহীন বাংলাদেশ। কিন্তু চাঁদাবাজি বন্ধ হয়নি। কিন্তু গণ–অভ্যুত্থানের শক্তি এখনো ঘুমিয়ে যায়নি, রাজপথে আছে। আমরা চাঁদাবাজদের ভয় পাই না। বাংলাদেশকে চাঁদাবাজ, সন্ত্রাস, দুর্নীতি ও বৈষম্যমুক্ত করেই আমরা ঘরে ফিরবে ইনশা আল্লাহ।’
মঙ্গলবার রাতে বরিশালে জুলাই পদযাত্রার অংশ হিসেবে আয়োজিত পথসভায় নাহিদ ইসলাম এ কথাগুলো বলেন। নগরের ফজলুল হক অ্যাভিনিউয়ে এই পথসভা হয়।
নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পরে আমরা বলেছিলাম, ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ করতে হবে, নতুন ব্যবস্থা তৈরি করতে হবে। চাঁদাবাজ, সন্ত্রাস, দুর্নীতিমুক্ত ও বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে। কিন্তু আমরা দেখছি, রাজনৈতিক দলগুলোর হাতে রক্তের দাগ লেগে আছে। আমরা দেখছি, নিজেদের মধ্যে অন্তঃকোন্দল চলছে, সবার হাতেই রক্ত লেগে রয়েছে।’
এর আগে নগরের হাসপাতাল রোড থেকে পদযাত্রা শুরু হয়। এটি জেলখানা মোড়, সদর রোড ঘুরে ফজলুল হক অ্যাভিনিউয়ে পথসভাস্থলে শেষ হয়।
‘চাঁদাবাজ বললে একটি দলের মন খারাপ হয়’
পথসভায় এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘চাঁদাবাজ বললে একটি দলের মন খারাপ হয়। টেন্ডারবাজ বললে একটি দলের গায়ে লাগে। কিন্তু আপনারা জনগণকে চেনেন না। দেশের মানুষ পরিবর্তন চায়। তারা আর গোলামি চায় না।’
হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, তারেক জিয়া, বিএনপিকে নিয়ে কথা বলা হলে সেটা নাকি গণতন্ত্রের জন্য ক্ষতিকারক। আমরা বলতে চাই, জনগণের ঊর্ধ্বে কোনো দল নেই, ব্যক্তি নেই। আপনাদের মনে রাখতে হবে, যেসব রাজনৈতিক দল আছে, তারা আপনাদের সেবক হওয়ার জন্য আসে, মালিক হওয়ার জন্য নয়। তাদের জবাবদিহি নিশ্চিত করার অধিকার বাংলাদেশের প্রত্যেকটি মানুষের রয়েছে। যারা এই জবাবদিহিকে রুদ্ধ করতে চায়, তারা আরেক ফ্যাসিবাদের দিকে যাচ্ছে।’
এনসিপির এই নেতা আরও বলেন, ‘নতুন করে কোনো জালিম তৈরি হলে, শক্ত হাতে মোকাবিলা করতে হবে। আমরা সংগ্রাম করে আমাদের লক্ষ্যে পৌঁছাবেই ইনশা আল্লাহ।’
এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম পথসভা সঞ্চালনা করেন। এতে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনিম জারা, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, তাসনুভা জাবিন, যুগ্ম সদস্যসচিব মাহমুদা মিতু প্রমুখ।
জুলাই পদযাত্রার অংশ হিসেবে এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা দক্ষিণাঞ্চলের ছয়টি জেলা সফর করেন। সর্বশেষ মঙ্গলবার সকালে ভোলা এবং রাতে বরিশালে পদযাত্রা ও পথসভার মধ্য দিয়ে দক্ষিণাঞ্চলের কর্মসূচি শেষ হয়। বুধবার তাঁরা গোপালগঞ্জের উদ্দেশে যাত্রা করবেন।