রংপুরে ‘বিক্রি হওয়া’ নবজাতক ও মায়ের ঠাঁই হলো শিশু পরিবারে

নবজাতক
প্রতীকী ছবি

রংপুরে হাসপাতালের বিল দিতে না পারায় বিক্রির করে দেওয়া নবজাতক ও তার মায়ের পাশে দাঁড়িয়েছে জেলা প্রশাসন। জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের সহযোগিতায় তাঁদের ঠাঁই হয়েছে সরকারি শিশু পরিবারে। আজ বুধবার সকাল ১০টায় রংপুর নগরীর বিনোদপুরে অবস্থিত সরকারি শিশু পরিবারের বালিকা শাখায় তাঁদের স্থানান্তর করা হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রংপুর জেলা সমাজসেবার অধিদপ্তরের উপপরিচালক আবদুল মতিন। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ১৩ জানুয়ারি রংপুর নগরীর ভুরারঘাট এলাকার ওয়াসিম আকরামের স্ত্রী লাবনী প্রসবব্যথা নিয়ে হলি ক্রিসেন্ট হাসপাতালে ভর্তি হন। ওই রাতে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে তিনি একটি ছেলেসন্তানের জন্ম দেন। তবে হাসপাতালের বিল দেওয়ার সামর্থ্য ছিল না। তাঁদের অসচ্ছলতা পুঁজি করে হাসপাতালের পরিচালক এম এস রহমান রনি তাঁর পূর্বপরিচিত জেরিনা আক্তার ও রুবেল হোসেনের কাছে ৪০ হাজার টাকার বিনিময়ে নবজাতককে বিক্রি করে দেন। এতে সহযোগিতা করে লাবনীর স্বামী ওয়াসিমও।

এ ঘটনায় লাবনী আক্তার কোতোয়ালি থানায় অভিযোগ দিলে পুলিশ রোববার নগরীর পীরজাবাদ এলাকা থেকে নবজাতককে উদ্ধার করে ও তিনজনকে গ্রেপ্তার করে। তাঁরা হলেন হাসপাতালের পরিচালক এস এম রহমান, জেরিনা আক্তার ও তাঁর স্বামী রুবেল হোসেন। আর লাবনীর স্বামী ওয়াসিম পলাতক। এ বিষয়ে ২১ জানুয়ারি ‘বিল দিতে না পারায় নবজাতক বিক্রি, হাসপাতালের পরিচালকসহ গ্রেপ্তার ৩’ শিরোনামে প্রথম আলোয় একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপপরিচালক আবদুল মতিন জানান, গণমাধ্যমে নবজাতক বিক্রির ঘটনায় খবর প্রকাশিত হলে বিষয়টি জেলা প্রশাসনের নজরে আসে। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোবাশ্বের হাসান জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরকে জানালে তাঁরা ওই নারীর পাশে দাঁড়ান। এ ঘটনায় করা মামলায় ওই নারীর স্বামীও আসামি। তাঁদের কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই, তাই মা ও শিশুকে সরকারি শিশু পরিবারে থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিষয়টি নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত সমাজসেবা থেকে সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।

আরও পড়ুন

রংপুর সরকারি শিশু পরিবার (বালিকা) তত্ত্বাবধায়ক আলতাব হোসেন সরকার বলেন, আজ সকালে নবজাতককে নিয়ে ওই নারী এখানে এসেছেন।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোবাশ্বের হাসান জানান, তাঁরা মা ও শিশুর পাশে আছেন। তাঁদের সব ধরনের সরকারি সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হবে।