চট্টগ্রামে বিএনপির হরতাল ঢিলেঢালা, নগরে চলছে যানবাহন, ভোরে বাসে আগুন
চট্টগ্রাম নগরে আজ রোববার বিএনপির ডাকা হরতাল ঢিলেঢালাভাবে পালিত হচ্ছে। বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে এই হরতালের ডাক দেওয়া হয়। হরতালে নগরজুড়ে চলছে অটোরিকশা, টেম্পো, বাসসহ ছোট-বড় যানবাহন। তবে ব্যক্তিগত গাড়ির উপস্থিতি ছিল কম। এ ছাড়া ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটসহ আন্তজেলায় চলাচলকারী দূরপাল্লার বাস ছাড়েনি।
নগরজুড়ে বিএনপির কর্মীদের হরতালের সমর্থনে পিকেটিং করতে দেখা যায়নি কর্মীদের। কেবল সকাল নয়টায় ২ নম্বর গেট এলাকায় একটি মিছিল বের করে উত্তর জেলা বিএনপি। নগরের কাজির দেউড়ি এলাকায় অবস্থিত বিএনপির কার্যালয় নাসিমন ভবন ছিল ফাঁকা। কার্যালয়ে তালা ঝুলতে দেখা গেছে দুপুর পর্যন্ত। কোনো কর্মীর উপস্থিতিও চোখে পড়েনি। তবে ভোরে পতেঙ্গা থানার কাটগড়ের গুমপাড়া এলাকায় একটি ফাঁকা বাসে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
পতেঙ্গা থানার উপপরিদর্শক মোহাম্মদ ফিরোজ প্রথম আলোকে বলেন, বাসটি পোশাকশ্রমিকদের নেওয়ার জন্য সেখানে অপেক্ষা করছিল। চালক বাস রাস্তার পাশে দাঁড় করিয়ে ফজরের নামাজ পড়তে মসজিদে যান। পরে দুর্বৃত্তরা এসে আগুন ধরিয়ে দেয়। স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতায় আগুন নেভানো হয়।
নগরের আগ্রাবাদ, মুরাদপুর, অক্সিজেন মোড়, চকবাজার এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বাস, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, টেম্পো, রিকশাসহ বিভিন্ন যানবাহন চলাচল করছে। স্কুল-কলেজ ও অফিসমুখী লোকজনও ছিলেন রাস্তায়। এ ছাড়া চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলার উদ্দেশে যানবাহন ছেড়েছে। তবে দূরপাল্লার বাস দেখা যায়নি। অবশ্য আজ নগরের বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে পুলিশের সতর্ক অবস্থান দেখা গেছে।
সকাল ৯টায় মুরাদপুর মোড়ে কথা হয় সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালক মোহাম্মদ ইকবালের সঙ্গে। তিনি যাত্রীর জন্য অপেক্ষা করছিলেন। ইকবাল বলেন, ‘গাড়ি নিয়ে বের না হলে পেট চলবে না। তাই বের হইছি।’ বাসচালক মো. সাইফুল বলেন, ‘রাস্তায় যাত্রী আছে। পরিস্থিতি বুঝে গাড়ি চালাচ্ছি।’
পুলিশ কনস্টেবল আমিরুল হক হত্যা মামলায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে গ্রেপ্তারের পর গত শুক্রবার পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত তাঁর ছয় দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এরপর তাঁকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে আজ হরতাল পালনের ঘোষণা দেয় বিএনপির চট্টগ্রাম নগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় বিএনপির ডাকা দেশব্যাপী দুই দিনের অবরোধ কর্মসূচিও চলমান রাখার কথা বলেন দলের নেতারা।
জানতে চাইলে সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের চট্টগ্রাম অঞ্চলের সভাপতি মোহাম্মদ মুছা প্রথম আলোকে বলেন, হরতালে আনোয়ারা, পটিয়া, বোয়ালখালী, বাঁশখালী, লোহাগাড়াসহ বিভিন্ন উপজেলায় বাস চলাচল করছে। তবে দূরপাল্লার যাত্রী না থাকায় গাড়ি চলছে না। রাস্তায় কোনো ধরনের সমস্যা হয়নি।
চট্টগ্রাম দক্ষিণ-কক্সবাজার-বান্দরবান জেলা মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সদস্যসচিব মো. মহিউদ্দিন চৌধুরী বলেন, দূরপাল্লার যাত্রী নেই। এ কারণে গাড়ি চলছে না। তবে উপজেলার সড়কে গাড়ি চলছে।