ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সিলিন্ডারবোঝাই ট্রাক খাদে পড়ে বিস্ফোরণ, পুরো এলাকায় আতঙ্ক
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গ্যাসের সিলিন্ডারবোঝাই একটি ট্রাক সড়কের পাশে খাদে পড়ে উল্টে যায়। এতে বিস্ফোরণের ঘটনায় আগুন ধরে যায়। আজ বুধবার ভোর সোয়া চারটার দিকে কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের শহরতলির বিরাসার এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। তবে এতে হতাহত হওয়ার কোনো ঘটনা ঘটেনি।
স্থানীয় বাসিন্দা, পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস সূত্র জানায়, গ্যাসের সিলিন্ডারবোঝাই ট্রাকটি ঢাকার সাভার থেকে ছেড়ে আসে। কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরতলির বিরাসার এলাকায় সড়কের পাশের খাদে আগে থেকেই একটি প্রাইভেট কার পড়ে ছিল। ভোরে ট্রাকটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে সেই প্রাইভেট কারের ওপর পড়ে। এ সময় বিকট শব্দে একাধিক বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। একপর্যায়ে ট্রাক ও প্রাইভেট কারে আগুন ধরে যায়। বিস্ফোরণের শব্দে আশপাশের লোকজন আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। আগুনের তাপে আশপাশের তিন থেকে চারটি দোকান ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং বিস্ফোরণের প্রচণ্ড শব্দে কয়েকটি ভবনের জানালার কাচ ভেঙে যায়। এতে কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের উভয় পাশে যানজটের সৃষ্টি হয়। হতাহত হওয়ার কোনো ঘটনা ঘটেনি।
খবর পেয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার পুলিশ এবং সরাইল ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের পাঁচটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে প্রায় দুই ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
স্থানীয় লোকজন বলেন, আশুগঞ্জ নৌবন্দর থেকে আখাউড়া স্থলবন্দর পর্যন্ত চার লেন সড়কের নির্মাণকাজ চলায় বিরাসার এলাকার সড়কটি দীর্ঘদিন ধরে বেহাল অবস্থায় আছে। এতে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে। খানাখন্দের কারণে যানবাহন উল্টে যাওয়ার ঘটনা নিয়মিত ঘটছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজের স্নাতক শিক্ষার্থী হাফসা আক্তার বলেন, ‘ফজরের নামাজের পর মোনাজাত শেষ করতেই বিকট শব্দ শুনতে পাই। বারান্দায় গিয়ে দেখি, চারদিকে আগুন। মাকে ডেকে দেখাই। পরে সবাইকে ডেকে চিৎকার শুরু করি। সেখানে ওপরে বিদ্যুতের তার ছিল, সেটি দেখে আরও ভয় লাগছিল। আল্লাহর রহমতে বিদ্যুতের তারে আগুন লাগেনি, না হলে বাসাবাড়িতেও আগুন ছড়াতে পারত।’
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোজাফফর হোসেন বলেন, ট্রাকটি কোথায় যাচ্ছিল এবং কতটি সিলিন্ডার ছিল, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক নিউটন দাস বলেন, ‘আমরা ভোর ৪টা ২০ মিনিটে খবর পাই। এরপর দুটি স্টেশনের পাঁচটি ইউনিট গিয়ে ছয়টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। হতাহত হওয়ার কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। ধারণা করছি, ট্রাকটিতে ২০০ থেকে ৩০০টি গ্যাস সিলিন্ডার ছিল।’