নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলার সোমেশ্বরী নদী থেকে অপরিকল্পিতভাবে বালু-পাথর উত্তোলন বন্ধ ও ইজারা বাতিলের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন স্থানীয় লোকজন। দুর্গাপুর প্রেসক্লাব মিলনায়তনে আজ শনিবার দুপুরে এ সংবাদ সম্মেলন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে আতিক খান নামের এক ব্যক্তি বলেন, স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে যোগসাজশ করে ইজারাদারেরা দীর্ঘদিন ধরে সোমেশ্বরী নদী থেকে হাজারের বেশি খননযন্ত্র বসিয়ে অপরিকল্পিতভাবে বালু ও পাথর উত্তোলন করছেন। এরপর তাঁরা সেসব ভেজা বালু ট্রাক ও লরিতে করে পরিবহন করছেন। এ কারণে রাস্তাঘাট ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এসব অনিয়ম বন্ধের দাবিতে স্থানীয় লোকজন বিভিন্ন সময় স্মারকলিপি দেওয়াসহ মানববন্ধন করেছেন। সর্বশেষ গত মঙ্গলবার জেলা প্রশাসকের কাছে স্থানীয় পাঁচ শতাধিক বাসিন্দার গণস্বাক্ষর নিয়ে আবেদন করা হয়। কিন্তু এতেও কাজ হয়নি।
সংবাদ সম্মেলনে দুর্গাপুর পৌর কাউন্সিলর শেখ আল আমিন, যুবলীগ নেতা রফিক রাজা, স্থানীয় বাসিন্দা মো. সেকান্দার, মঞ্জুরুল হক, মুজিবুর রহমান, তারা মিয়া, পাপন সরকার, আনোয়ার হোসেন, মোতালিব মিয়া, সিরাজুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
স্থানীয় লোকজন ও জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, দুর্গাপুরের সোমেশ্বরী নদীতে পাঁচটি বালুমহাল আছে। এ বছর জেলা প্রশাসন ওই বালুমহালগুলো প্রায় সাড়ে ২৬ কোটি টাকায় অঞ্জন সরকার, ধনেশ পত্রনবিশ, ফারুক আহমেদ, সাইফুল মিয়া ও নজরুল ইসলাম নামের পাঁচ ব্যক্তিকে ইজারা দেয়। কিন্তু ইজারাদারেরা নিয়মনীতি না মেনেই বালু উত্তোলন ও পরিবহন করছেন। ইজারাদারেরা সরকারদলীয় ও প্রভাবশালী হওয়ায় স্থানীয় প্রশাসনও তাঁদের বিষয়ে তেমন পদক্ষেপ নিচ্ছে না।
সংবাদ সম্মেলনে যুবলীগ নেতা রফিক রাজা বলেন, ‘সোমেশ্বরী নদীর বালু এখন আমাদের কাছে শুধু দুঃখের কারণ নয়, এটি মূলত অভিশাপে পরিণত হয়েছে। কোনো নিয়মনীতি না মেনে ইজারাদার ও প্রভাবশালীরা বালু উত্তোলন ও পরিবহন করে যাচ্ছেন। আমরা চাই, ইজারার শর্ত ভঙ্গ করায় জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ যেভাবে কলমাকান্দার মহাদেও নদ থেকে বালু উত্তোলন বন্ধসহ ইজারা বাতিল করে দিয়েছেন, দুর্গাপুরের সোমেশ্বরী নদীতেও সেই আইন প্রয়োগ করবেন।’
জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ বলেন, প্রশাসন মাঝেমধ্যে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে ভেজা বালুভর্তি ট্রাক-লরিকে জরিমানা করে। গত মাসে ইজারাদারদের নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শনসহ ইজারার শর্তের কথা স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়। লিখিত অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত করতে স্থানীয় প্রশাসনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। প্রতিবেদন হাতে পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।