সড়কের সংস্কার আটকে আছে, ভোগান্তি

বর্ষা মৌসুমে সড়কটি পানি ও কাদায় একাকার। সড়কে হেঁটে চলাচল করাও দুঃসাধ্য হয়ে পড়ে।

বেহাল সড়কে চলাচলে ভোগান্তি পোহাচ্ছে এলাকার মানুষ। গতকাল ফরিদপুর সদর উপজেলার বাখুন্ডা এলাকায়
প্রথম আলো

পিচ ঢালাই করে সংস্কার করা হবে সড়কটি। এ জন্য তুলে ফেলা হয়েছিল বিছানো ইটগুলো। এর মধ্যে চলে গেছে চারটি বছর। কিন্তু সড়কটি সংস্কার হয়নি। এতে এ সড়ক দিয়ে চলাচলকারী ওই এলাকার অন্তত ১০টি গ্রামের ২০ হাজার মানুষ চরম দুর্ভোগের মুখে পড়েছেন।

এ চিত্র ফরিদপুরের সদর উপজেলার বাখুন্ডা-তাম্বুলখানা-কানাইপুর সড়কের। বর্ষা মৌসুমে সড়কটি পানি ও কাদায় একাকার। যানবাহন চলাচল দূরের কথা, সড়কে হেঁটে চলাচল করাও দুঃসাধ্য হয়ে পড়ে।

সড়কটি স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) অধীন। এটি ফরিদপুর সদর উপজেলার গেরদা ইউনিয়নের বাখুন্ডা বাজার হয়ে ক্লাব বাজার, কৈজুরী ইউনিয়নের তাম্বুলখানা হয়ে কানাইপুর ইউনিয়নে গিয়ে মিশেছে। এর মধ্যে কৈজুরী ইউনিয়নের মধ্যে পড়েছে প্রায় ছয় কিলোমিটার অংশ। এ অংশই সবচেয়ে বেহাল। বাখুন্ডা, চরপাড়া, ক্লাব বাজার, আকইন ভাটপাড়া, কৈজুরী, বেতবাড়িয়া, তাম্বুলখানাসহ ১০টি গ্রামের ২০ হাজার ভোগান্তিতে রয়েছেন।

২০১৮ সালে বাখুন্ডা থেকে তাম্বুলখানা বাজার পর্যন্ত এবং আকইন-সাইচা পর্যন্ত প্রায় ১০ কিলোমিটার সড়ক মেরামতের কাজ পান ঠিকাদার সাজ্জাদ হোসেন ওরফে বরকত। সাজ্জাদ হোসেন ফরিদপুর শহর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। বর্তমানে তিনি দুই হাজার কোটি টাকা অর্থ পাচার মামলার আসামি হিসেবে কারাগারে রয়েছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সাজ্জাদ হোসেন সড়কটির কাজ পাওয়ার পর আকইন-সাইচা অংশের ইটের সলিং তুলে ফেলা হয়। তা ছাড়া বাখুন্ডা বাজার থেকে তাম্বুলখানা বাজার পর্যন্ত সড়কটির বেশির ভাগ স্থানের পিচ তুলে ফেলা হয়। পরে ঠিকাদার কারাগারে গেলে রাস্তাটির সংস্কারকাজ বন্ধ হয়ে যায়। এর পর থেকে ওই অবস্থায় রয়েছে।

স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, এ বিষয়ে একাধিকবার স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা প্রকৌশলীর কাছে চিঠি দেওয়া হয়েছে। কোনো সমাধান মেলেনি। ভোগান্তি ও দুর্দশার মধ্য দিয়েই চলতে হচ্ছে।

তাম্বুলখানা গ্রামের হাসেম মাতুব্বর বলেন, ফরিদপুর শহর থেকে তাঁরা বিভিন্ন জিনিসপত্র কিনে এ সড়ক দিয়ে গ্রামে আসতেন। কিন্তু কয়েক বছর ধরে সড়কটি খারাপ। তেমন একটা চলাচল করেন না।

সড়কটি নিয়ে কৈজুরী ইউপির চেয়ারম্যান ও সদস্যরা বিপাকে রয়েছেন। ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য হায়দার শেখ বলেন, ‘জনগণ আমাদের গালমন্দ করে। সব নীরবে সহ্য করতে হয়। এলজিইডিকে বিষয়টি জানালেও কোনো ব্যবস্থা নেয় না। কবে এ থেকে মুক্তি পাব জানি না।’

এলজিইডির ফরিদপুর কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী ফারুক হোসেন বলেন, ‘সড়কটির কাজ পেয়েছিলেন সাজ্জাদ হোসেন । তিনি দীর্ঘদিন কারাগারে আছেন। এ জন্য নতুন করে দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। চারজন ঠিকাদার এ কাজের জন্য দরপত্র জমা দিয়েছেন। কাগজপত্র ঢাকায় এলজিইডির প্রধান কার্যালয়ে পাঠাব। অনুমোদনের পর সড়কের কাজ শুরু করা যাবে।’