শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগে ২০ লাখ টাকা পর্যন্ত নিয়ে থাকে বিদ্যালয় কমিটি: নিক্সন চৌধুরী

ফরিদপুরে জেলা পরিষদ আয়োজিত কৃতী শিক্ষার্থীদের মেধাবৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি সংসদ সদস্য মুজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সন
ছবি: প্রথম আলো

ফরিদপুর-৪ আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য ও যুবলীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মুজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সন বলেছেন, ব্যবস্থাপনা কমিটির মাধ্যমে নিয়োগ বাণিজ্য বন্ধ হওয়া উচিত। এর ফলে যোগ্যদের মূল্যায়ন করা হচ্ছে না, অযোগ্যরা শিক্ষক-কর্মচারী হওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন।

ফরিদপুরে জেলা পরিষদ আয়োজিত কৃতী শিক্ষার্থীদের মেধাবৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন নিক্সন চৌধুরী। আজ বুধবার দুপুর সোয়া ১২টার দিকে জেলা পরিষদের উদ্যোগে শহরের কবি জসীমউদ্‌দীন হলে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানে সংসদ সদস্য নিক্সন চৌধুরী বলেন, ‘সারা দেশের বিদ্যালয়গুলোতে ব্যবস্থাপনা কমিটির নির্বাচন ব্যাপক ঢাকঢোল পিটিয়ে অনুষ্ঠিত হয়। তাঁরা যেভাবে নির্বাচন করেন, সেভাবে এমপি-চেয়ারম্যানরাও নির্বাচন করেন না। নির্বাচনে তাঁরা ব্যাপক অর্থ ব্যয় করেন। নির্বাচিত হয়েই রাজনীতি, স্বজনপ্রীতি, দুর্নীতি, নিয়োগ বাণিজ্য শুরু করেন। কোথাও কোথাও শুনি, একজন শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগে ২০ লাখ টাকা পর্যন্ত নিয়ে থাকেন বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি। এসব বন্ধ হওয়া উচিত।’

সারা দেশের বিদ্যালয়গুলোতে ব্যবস্থাপনা কমিটির নির্বাচন ব্যাপক ঢাকঢোল পিটিয়ে অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে তাঁরা ব্যাপক অর্থ ব্যয় করেন। কোথাও কোথাও শুনি, একজন শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগে ২০ লাখ টাকা পর্যন্ত নিয়ে থাকেন বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি। এসব বন্ধ হওয়া উচিত।
মুজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সন, সংসদ সদস্য, ফরিদপুর-৪ আসন

নিক্সন চৌধুরী বলেন, ‘সারা দেশের প্রতিটি বিদ্যালয়ে চারতলা করে ভবন দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২০১৪ সালে যখন প্রথম সাংসদ নির্বাচিত হলাম, সকালে উঠেই দেখতাম, বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণ আর বিদ্যুৎ–সংযোগের সুপারিশ নিয়ে অনেকে অপেক্ষা করছেন। আমার এলাকার বেশির ভাগ বিদ্যালয়ে ভবন ছিল না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত দিয়ে সব বিদ্যালয়েই ভবন নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে। এখন ভবন দেওয়ার মতো বিদ্যালয়ও নেই, বিদ্যুৎ–সংযোগও কোথাও বাকি নেই, আর সুপারিশ নিয়েও কেউ অপেক্ষায় নেই।’

নিক্সন চৌধুরী বলেন, শিক্ষা খাতে প্রধানমন্ত্রীর এই অভাবনীয় উন্নয়নের উদ্দেশ্য হচ্ছে, একটি সুশিক্ষিত জাতি গড়ে তোলা। শিক্ষক নিয়োগ বাণিজ্য বন্ধ করা না গেলে প্রধানমন্ত্রীর এই উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে বাধা সৃষ্টি করবে।

জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মুজিবুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শাহাদাৎ হোসেন। আরও উপস্থিত ছিলেন ভাঙ্গা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এস এম হাবিবুর রহমান, সদরপুরের কাজী শফিকুর রহমান, চরভদ্রাসনের মো. কাউসার, সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের অধ্যক্ষ অসীম কুমার সাহা, সরকারি সারদা সুন্দরী মহিলা কলেজে অধ্যক্ষ গোলাম মোস্তফা প্রমুখ।

পরে জেলা পরিষদের অর্থায়নে এসএসসি পরীক্ষায় ভালো ফল অর্জনকারী ২২১ জন এবং এইচএসসি পরীক্ষায় ভালো ফল অর্জনকারী পর্যায়ের ১০০ জনসহ মোট ৩২১ জন কৃতী শিক্ষার্থীর হাতে আনুমানিক ১৬ লাখ টাকার শিক্ষাবৃত্তি তুলে দেন সংসদ সদস্য নিক্সন চৌধুরী। অনুষ্ঠানে বসুন্ধরা মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড পাওয়ায় জেলা পরিষদের মুখপত্র সাপ্তাহিক গণমন–এর নির্বাহী সম্পাদক ফরিদপুরের প্রবীণ সাংবাদিক তমিজউদ্দিন তাজের হাতে ক্রেস্ট, সম্মাননা স্মারক ও নগদ অর্থ তুলে দেন নিক্সন চৌধুরী।