গাজীপুরে মারামারির ভিডিও ধারণ করার সময় মারধরের শিকার যুবকের মৃত্যু

এনামুল হকছবি: সংগৃহীত

গাজীপুরের কাপাসিয়ায় নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের এক নেতার ওপর হামলা ঘিরে মারামারির ভিডিও ধারণ করতে গিয়ে মারধরের শিকার এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। বুধবার দিবাগত রাত পৌনে ১২টায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মো. এনামুল হক (৩৬) নামের ওই যুবকের মৃত্যু হয়। আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পরিবারের সদস্যরা থানায় মামলা করতে এলে বিষয়টি জানাজানি হয়।

এনামুল হক উপজেলার চাঁদপুর ইউনিয়নের তিনশুনিয়া গ্রামের গিয়াস উদ্দিনের ছেলে। তিনি দীর্ঘদিন বিদেশে থেকে সম্প্রতি দেশে এসেছিলেন। ১৩ জানুয়ারি দুপুর ১২টায় তাঁকে মারধর করা হয়। বৃহস্পতিবার রাত আটটায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত এ ঘটনায় থানায় মামলা করার প্রস্তুতি চলছিল।

এনামুলের বোন নাসিমা সুলতানা ঘটনার বর্ণনায় বলেন, ১৩ জানুয়ারি তিনশুনিয়া গ্রামে ভাকোয়াদী উচ্চবিদ্যালয় মাঠে জাতীয় পরিচয়পত্র (স্মার্ট কার্ড) বিতরণ কার্যক্রম চলছিল। এ সময় সেখানে স্মার্ট কার্ড সংগ্রহ করতে যান চাঁদপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি মো. ফরিদ। এ সময় তাঁর ওপর ২০-২৫ জন এসে হামলা চালায়। হামলাকারীদের প্রতিহত করেন ফরিদের লোকজন। এ সময় হট্টগোল দেখে এগিয়ে যান এনামুল। তিনি পাল্টাপাল্টি হামলার ভিডিও ধারণ করা শুরু করেন। বিষয়টি দেখতে পেয়ে তাঁর ওপর হামলা চালায় অজ্ঞাতপরিচয় কয়েকজন। এতে গুরুতর আহত হলে তাঁকে গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে তাঁর চিকিৎসা চলছিল।

নাসিমা সুলতানা বলেন, একপর্যায়ে বুধবার অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসকেরা এনামুলকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। হাসপাতালে নেওয়ার পর রাতে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। ভাইকে হত্যাকারীদের শনাক্ত করে অতিদ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি জানান নাসিমা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় এক ব্যক্তি জানিয়েছেন, পতিত সরকারের আমলে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নির্যাতনের শিকার স্থানীয় বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের লোকজন মো. ফরিদের ওপর হামলা চালিয়েছিলেন। পাল্টা হামলাও করেছিলেন ফরিদের লোকজন। দৃশ্যটি ভিডিও করতে গিয়ে এনামুল হামলার শিকার হন। তবে তিনি হামলাকারীদের নাম জানাতে পারেননি।

এ বিষয়ে কাপাসিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. কামাল হোসেন বৃহস্পতিবার রাত আটটায় প্রথম আলোকে বলেন, দুই পক্ষের মারামারির সময় হামলার শিকার হয়েছিলেন ওই ব্যক্তি। পরে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। স্বজনেরা থানায় উপস্থিত হয়েছেন। তাঁরা মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এ ঘটনায় আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।