শীত উপেক্ষা করেই ঘর থেকে বেরিয়েছেন এক দিনমজুর। সদর উপজেলার বোয়ালমারী এলাকায়
ফাইল ছবি: প্রথম আলো

চুয়াডাঙ্গায় ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে একলাফে ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা কমেছে। আজ বৃহস্পতিবার চুয়াডাঙ্গায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে গতকাল বুধবার তাপমাত্রা ছিল ১৭ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আবহাওয়া অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, এক দিনের ব্যবধানে হঠাৎ তাপমাত্রা এতটা কমে যাওয়ার ঘটনা অস্বাভাবিক।

আকস্মিক তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় আজ সকাল থেকে প্রচণ্ড শীত অনুভূত হচ্ছে। টানা ১০ দিন পর আজ সকালে শহরবাসীকে আবার শীতের মোটা পোশাক পরতে দেখা গেছে। আজ দুপুরেও মানুষজনকে শীতের পোশাক পরে চলাচল করতে দেখা গেছে। চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার পুরাতনপাড়ার বাসিন্দা গৃহবধূ জলি বেগম বলেন, ‘চাইর-পাঁচ দিন ধইরে মনেই হইচোলোনা যে শীতকাল আচে। অ্যাকেবারে ফাল্গুন মাসের মতো অবস্তা। তবে বুদবার (বুধবার) রাইত থিকে বেশ জাড় (শীত) লাগতি শুরু করেচে।’

চুয়াডাঙ্গার হাটকালুগঞ্জে অবস্থিত প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রকিবুল হাসান প্রথম আলোকে বলেন, সাধারণত তাপমাত্রা গড়ে ২ থেকে ৩ ডিগ্রি ওঠানামা করে থাকে। তবে তিনি তাঁর ১৯ বছরের চাকরিজীবনে একলাফে তাপমাত্রা ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমতে দেখেননি। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে এমনটা হতে পারে বলে ধারণা করছেন তিনি।

আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার সূত্রে জানা গেছে, গত ২১ জানুয়ারি চুয়াডাঙ্গায় সর্বশেষ শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যায়। ওই দিন জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৭ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। পরদিন ২২ জানুয়ারি তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১১ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এরপর তাপমাত্রা আরেক দফায় বেড়ে যায়। ২৩ জানুয়ারিতে তাপমাত্রা ১৩ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ২৪ জানুয়ারি ১৪ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ২৫ জানুয়ারি ১৪ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ২৬ জানুয়ারি ১৬ দশমিক ০ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ২৭ জানুয়ারি ১৪ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ২৮ জানুয়ারি ১৪ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ২৯ জানুয়ারি ১০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ৩০ জানুয়ারি ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ৩১ জানুয়ারি ১৫ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং ১ ফেব্রুয়ারি ১৭ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়।

তাপমাত্রার অস্বাভাবিক ওঠানামায় শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায় বলে মনে করছেন চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিভাগের পরামর্শক আবুল হোসেন। তিনি বলেন, তাপমাত্রা অস্বাভাবিকভবে ওঠানামা করছে। এতে শ্বাসকষ্ট, অ্যাজমা, জ্বর, সর্দি–কাশিসহ শীতজনিত রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাবে। শিশু ও বয়োজ্যেষ্ঠ রোগীদের জন্য এসব রোগের ঝুঁকি বেশি।