চট্টগ্রামের কোথায় পাবেন পোষা প্রাণীর খাবার

পোষা প্রাণীর জন্য খাবার দেখছেন এক ক্রেতা। নগরের দুই নম্বর গেট এলাকায় সিটিজি পেট শপেছবি: জুয়েল শীল

শখ করে ২০২১ সাল থেকে দুটি পোষা বিড়াল পুষতে শুরু করে চট্টগ্রামের একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী সানজিদা আক্তার। আগে থেকে বিড়াল পোষার অভিজ্ঞতা না থাকায় শখের প্রাণী দুটির খাবারদাবার নিয়ে শুরুতে দুশ্চিন্তায় পড়ে যান তিনি। প্রথমে মাছ, দুধ, কলা এসব খেতে দিতেন বিড়াল দুটিকে। তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিড়ালের খাবার সম্পর্কিত তথ্য দেখার পর পরিবর্তন করেন খাদ্যাভ্যাস।

বর্তমানে চট্টগ্রামের বেশির ভাগ বাড়িতেই কোনো না কোনো পোষা প্রাণী কিংবা পাখি রয়েছে। পোষ্যকে নিজেদের পরিবারের সদস্য হিসেবেই আপন করে নেন তাদের মালিকেরা। তাই তাদের খাদ্যাভ্যাস নিয়ে দুশ্চিন্তায় থাকেন তাঁরা। তবে এখন এই দুশ্চিন্তা অনেকটাই কমেছে।

বর্তমানে নগরের বিভিন্ন এলাকায় গড়ে উঠেছে পোষা প্রাণীর খাবারের দোকান। দেশীয় খাবারের পাশাপাশি আমদানি করা খাবারও পাওয়া যায় এসব দোকানে। নগরের ২ নম্বর গেট, দেওয়ানহাট, রিয়াজউদ্দিন বাজার, বহদ্দারহাট, মুরাদপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় এখন পোষা প্রাণীর খাবার পাওয়া যায়। এ ছাড়া বিভিন্ন সুপার শপেও পাওয়া যায় এসব খাবার।

কী খাওয়াবেন

যাঁদের বাসায় পোষা বিড়াল কিংবা কুকুর রয়েছে, তাঁরা অধিকাংশ ক্ষেত্রে আমদানি করা খাদ্য ব্যবহার করেন। খাবারের ব্র্যান্ডের মধ্যে রয়েছে পেডিগ্রি, ক্যানিবা, রয়্যাল ক্যানিন, উইস্কাস ইত্যাদি। পাখির খাবারের ক্ষেত্রে বিভিন্ন বীজের মিশ্রণ (সিডমিক্স) রয়েছে, যার মধ্যে গম, গুঁজি তিল, তিসি বীজ, মিলেট, ধান, সূর্যমুখী বীজ ইত্যাদি রয়েছে। তবে গরমে পাখিকে সূর্যমুখী বীজ না খাওয়ানো ভালো।

বিড়ালের ও কুকুরের আমিষের চাহিদার জন্য মাছ, মাংস ও প্রোটিন–জাতীয় দানাদার খাবার রয়েছে। এসব খাবার কেজি হিসেবে প্যাকেটজাত করে বিক্রি করা হয়ে থাকে। এ ছাড়া বিড়ালের টুনা পেস্ট, কুকুরের জন্য বিভিন্ন মাংসের পেস্টও পাওয়া যায় বাজারে। এসব খাবারে পোষা প্রাণীর জন্য পর্যাপ্ত খাদ্য গুণাগুণ রয়েছে। কেজিপ্রতি ৩০০ টাকার আশপাশে পাওয়া যায় এসব খাবার।

প্যাকেটজাত খাবারের পাশাপাশি খোলা বীজ পাওয়া যায় পাখির খাবার হিসেবে। নগরের কর্ণফুলী কমপ্লেক্স বাজারে
ছবি: জুয়েল শীল

পাখির খাবারে ক্ষেত্রে খোলা বীজ আলাদা আলাদা প্রতি কেজি ৪০ থেকে ১৫০ টাকায় পাওয়া যায়। এ ছাড়া প্যাকেটজাত দেশীয় সিডমিক্স ৮০ থেকে ১৫০ টাকা। প্যারাকিট শ্রেণির পাখির জন্য আমদানি করা সিডমিক্স ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা। এ ছাড়া লরিক্যাট ও প্যারট শ্রেণির পাখির জন্য আমদানি করা সিডমিক্স এক হাজার টাকার আশপাশে।

এ ছাড়া সাপ্তাহিক খাবারের তালিকায় পাখির জন্য ক্যালসিয়াম ব্লক, এগফুড মিক্স, কাটল ফিশ বোন, কলমি শাকসহ ইত্যাদি খাবার দেওয়া যেতে পারে। কুকুর বিড়ালের ক্ষেত্রে প্যাকেটজাত খাবারের পাশাপাশি ঘরে তৈরি মাংসের পেস্টও দেওয়া যায়।

কোথায় পাবেন

চট্টগ্রামে পোষা প্রাণী পালকদের অধিকাংশ নগরের দেওয়ানহাট বাজার ও রিয়াজউদ্দিন বাজার এলাকা থেকে খাবার সংগ্রহ করেন। তবে শৌখিন পশুপাখি পালনকারী বিভিন্ন দোকান থেকে অনলাইনেও খাবার অর্ডার করে থাকেন। পাখির খাবারে জন্য রিয়াজউদ্দিন বাজারে ১৫ থেকে ২০টি দোকান রয়েছে। এর বাইরে দেওয়ানহাট বাজারে চার-পাঁচটি দোকান রয়েছে।

তবে বিড়াল ও কুকুরের খাবার কেনার ক্ষেত্রেই বেশি দুশ্চিন্তায় পড়েন ক্রেতারা। এ ক্ষেত্রে তাঁরা বিভিন্ন অনলাইন শপ থেকেই কেনাকাটা করেন খাবার। তবে বর্তমানে নগরের বিভিন্ন সুপার শপে পোষা প্রাণীর খাবার পাওয়া যায়। এ ছাড়া বিভিন্ন এলাকায়ও এসবের দোকান রয়েছে।

সিটিজি পেট শপের স্বত্বাধিকারী জিয়া উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে বিড়াল পালন বেড়েছে। বিড়ালের পাশাপাশি কুকুর ও পাখির খাবার বিক্রি হয়। তবে অর্থনৈতিক কারণে অনেকেই পশুপাখি পালন ছাড়ছেন।