শিক্ষকদের দেড় কোটি টাকার হাজিরাযন্ত্র বিকল

জেলার ৬৯৮টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ডিজিটাল হাজিরাযন্ত্র বিকল হয়ে পড়ে আছে।

প্রাথমিক বিদ্যালয়ের হাজিরা যন্ত্র অকেজো হয়ে পড়ে আছে। গত বৃহস্পতিবার শরীয়তপুর সদরের পশ্চিম কোটাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে
ছবি: প্রথম আলো

শরীয়তপুর জেলার ৬৯৮টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জন্য কেনা প্রায় দেড় কোটি টাকার ডিজিটাল হাজিরাযন্ত্র বিকল হয়ে পড়ে আছে। শিক্ষকদের বিদ্যালয়ে প্রবেশ ও বাহির হওয়ার সময় পর্যবেক্ষণ করার জন্য এসব যন্ত্র বসানো হয়েছিল। অধিকাংশ বিদ্যালয়ের হাজিরাযন্ত্রই নষ্ট হয়ে গেছে।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয় সূত্র জানায়, শরীয়তপুরে ৬৯৮টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের হাজিরা পর্যবেক্ষণ করার জন্য প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর ডিজিটাল হাজিরাযন্ত্র ক্রয় করে তা বসানোর নির্দেশ দেয়। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে বিভিন্ন বিদ্যালয়ে শিক্ষকদের কক্ষে হাজিরাযন্ত্রগুলো স্থাপন করা হয়। বাৎসরিক স্লিপ ফান্ডের খরচ থেকে ১৫–২০ হাজার টাকা ব্যয় করে এসব যন্ত্র বসানো হয়।

শরীয়তপুর সদরের পশ্চিম কোটাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক উম্মে কুলছুম প্রথম আলোকে বলেন, হাজিরাযন্ত্রটি শিক্ষকদের কক্ষের দেয়ালে বসানো আছে। সেটি যাতে নষ্ট না হয়, সে জন্য বিদ্যুৎ–সংযোগ দিয়ে রাখা হয়েছে। নির্দেশনা না থাকায় কোনো শিক্ষক সেটি ব্যবহার করছেন না।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ভেদরগঞ্জ উপজেলার একটি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বলেন, জেলার সব বিদ্যালয়ে হাজিরাযন্ত্র বসানোর জন্য অন্তত দেড় কোটি টাকা ব্যয় করতে হয়েছিল। সম্পূর্ণ টাকাই নষ্ট হলো।

গত বৃহস্পতিবার শরীয়তপুর সদরের আটং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কক্ষের দেয়ালে ডিজিটাল হাজিরাযন্ত্র দেখা যায়। কিন্তু সেটি সচল নয়, নষ্ট হয়ে গেছে। বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক মাহমুদা পারভিন প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার চিঠি পেয়ে ডিজিটাল হাজিরাযন্ত্র বসিয়েছেন। কিন্তু কখনোই কার্যকরভাবে ব্যবহার করা হয়নি। শিক্ষা কর্মকর্তারাও হাজিরাযন্ত্র চালু রাখা ও তার তথ্য সংরক্ষণ করার তাগিদ দেননি। ব্যবহার না করার কারণে এখন যন্ত্রটি নষ্ট হয়ে গেছে।

এ বিষয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবদুল আজিজ বলেন, ‘আমি এ জেলায় নতুন এসেছি। বিস্তারিত খোঁজ নিয়ে জানাতে পারব।’

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা বলেন, অনেক শিক্ষক বিদ্যালয়ে আসতে দেরি করেন। অনেকে দুপুরে ছুটি দিয়ে দেন। এ জন্য যন্ত্রের ব্যবস্থা করা হয়েছিল।