তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে রংপুরে সমাবেশ

তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে সমাবেশ। আজ শনিবার রংপুরে তিস্তা রেলসেতু এলাকায়ছবি: প্রথম আলো

তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে রংপুরে সমাবেশ হয়েছে। আজ শনিবার বিকেলে ‘তিস্তা বাঁচাও, নদী বাঁচাও’ সংগ্রাম পরিষদের আয়োজনে কাউনিয়া তিস্তা রেলসেতু এলাকায় সমাবেশের আয়োজন করা হয়। রংপুর, নীলফামারী, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধা জেলার কয়েক হাজার মানুষ এ সমাবেশে অংশ নেন।

‘তিস্তা বাঁচাও, নদী বাঁচাও’ সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি নজরুল ইসলাম হক্কানীর সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন আয়োজক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক শফিয়ার রহমান, সদস্য বখতিয়ার হোসেন, মীর রবি, মশিউর রহমান প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, উজানে পানি প্রত্যাহারের কারণে শুষ্ক মৌসুমে তিস্তা নদীর মরণদশা হয়। আর বর্ষায় উজানের পানিতে নদীর তীরে বন্যা ও ভাঙনে নিঃস্ব হচ্ছেন মানুষেরা। তিস্তাপারের মানুষের দীর্ঘদিনের এ দুর্ভোগের শেষ হচ্ছে না। গত বছর রংপুর জিলা স্কুলের জনসভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের ঘোষণা দেন। এরপর চীনের রাষ্ট্রদূত তিস্তা এলাকা পরিদর্শন করেন। এতে তিস্তাপারের মানুষ আশায় বুক বাঁধে। কিন্তু তিস্তা মহাপরিকল্পনা চীন করবে নাকি ভারত করবে, এ নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হওয়ায় তিস্তাপারের মানুষেরা হতাশ হয়েছেন।

নজরুল ইসলাম হক্কানী বলেন, ‘অবিলম্বে তিস্তা নদী সুরক্ষায় বিজ্ঞানসম্মতভাবে তিস্তা মহাপরিকল্পনার দ্রুত বাস্তবায়ন চাই। অভিন্ন নদী হিসেবে ভারতের সাথে ন্যায্য হিস্যার ভিত্তিতে তিস্তা চুক্তি সম্পন্ন করতে হবে। তিস্তা নদীতে সারা বছর পানির প্রবাহ ঠিক রাখতে জলাধার নির্মাণ, তিস্তা নদীর শাখা-প্রশাখা ও উপশাখাগুলোর সাথে নদীর পূর্বেকার সংযোগ স্থাপন ও নৌ চলাচল পুনরায় চালুর দাবি জানাই।’

নজরুল ইসলাম হক্কানী আরও বলেন, ভূমিদস্যুদের হাত থেকে অবৈধভাবে দখল করা তিস্তাসহ এর শাখা-প্রশাখা দখলমুক্ত করা। নদীর বুকে ও তীরে গড়ে ওঠা সব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ এবং নদী থেকে অবৈধ বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ, তিস্তার ভাঙন, বন্যা ও খরায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের স্বার্থ সংরক্ষণ করতে হবে।

নদীভাঙনের শিকার ভূমি–গৃহহীন ও মৎস্যজীবী মানুষের পুনর্বাসন, তিস্তা মহাপরিকল্পনায় তিস্তা নদী ও এর তীরবর্তী কৃষকদের স্বার্থ সুরক্ষায় কৃষক সমবায় ও কৃষিভিত্তিক কলকারখানা গড়ে তোলা এবং মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের ক্ষতিপূরণ প্রদান ও প্রস্তাবিত প্রকল্প এলাকায় অগ্রাধিকার ভিত্তিতে তিস্তাপারের মানুষের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করার দাবি জানানো হয় সমাবেশে।