জেলা প্রশাসক যমজ চার নবজাতকের নাম দিলেন দোয়েল, কোয়েল, ময়না ও টিয়া

হাসপাতালের শয্যায় দোয়েল, কোয়েল, ময়না ও টিয়া। সুস্থ আছে তারা। বুধবার দুপুরে আঁখিতারা জেনারেল হাসপাতালে
ছবি: প্রথম আলো

চুয়াডাঙ্গার একটি বেসরকারি হাসপাতালে কল্পনা খাতুন নামের এক নারী জন্ম দিয়েছেন চার নবজাতক—এমন খবর পেয়ে আজ বুধবার দুপুরে মিষ্টি, ফুল নিয়ে মা ও নবজাতকদের দেখতে যান জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম খান। পাশাপাশি কন্যাসন্তান চারটির নামও রেখেছেন তিনি। নাম রাখেন পাখির নামে—দোয়েল, কোয়েল, ময়না ও টিয়া।

চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার জুড়ানপুর ইউনিয়নের বিষ্ণুপুর গ্রামের নির্মাণশ্রমিক মাহবুল হোসেনের স্ত্রী সন্তানসম্ভবা কল্পনা খাতুনকে গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে স্থানীয় আঁখিতারা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে গাইনি কনসালট্যান্ট আকলিমা খাতুনের তত্ত্বাবধানে সন্ধ্যায় অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে একে একে চার কন্যাসন্তানের জন্ম দেন কল্পনা। মাহবুল-কল্পনা দম্পতির এ ছাড়া ১০ বছর বয়সী একটি পুত্রসন্তান আছে।

চার নবজাতক শারীরিকভাবে কিছুটা অসুস্থ হয়ে পড়লে তাদের বুধবার সকালে চুয়াডাঙ্গার ১০০ শয্যার জেলা হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে শিশু বিভাগের পরামর্শক মাহবুল হোসেনের কাছে চিকিৎসা নিয়ে অবস্থার উন্নতির হলে দুপুরে সেখান থেকে আবার বেসরকারি হাসপাতালটিতে ফিরিয়ে নেওয়া হয়।

আঁখিতারা জেনারেল হাসপাতালে গাইনি কনসালট্যান্ট আকলিমা খাতুন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার পেশাগত জীবনে গত ২০ বছরে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে চারটি যমজ কন্যাসন্তান জন্ম নেওয়ার ঘটনা এই প্রথম। চার নবজাতকের সবাই সুস্থ আছে।’

খবর পেয়ে চার নবজাতক ও তাদের মাকে দেখতে দুপুরে বেসরকারি হাসপাতালটিতে দেখতে যান জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম খান। সেখানে নবজাতকদের বাবা-মাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান তিনি এবং উপস্থিত সবাইকে মিষ্টিমুখ করান। এ ছাড়া নবজাতকদের ওষুধ-পথ্যসহ প্রয়োজনীয় উপকরণ কিনতে ১০ হাজার টাকা তুলে দেন।

হাসপাতালে গিয়ে জেলা প্রশাসক জানতে পারেন, নবজাতকদের নাম রাখা হয়নি। এ সময় তাদের বাবা-মা ও গাইনি কনসালট্যান্ট আকলিমা খাতুন বাচ্চাদের নাম রাখার জন্য জেলা প্রশাসককে অনুরোধ করেন। এরপর দেশীয় পাখির নামে চার নবজাতকের নাম রাখেন জেলা প্রশাসক।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম খান বলেন, ‘হাসপাতালে গিয়ে যমজ নবজাতকদের বাবা-মাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানাই এবং উপস্থিত সবাইকে মিষ্টিমুখ করাই। এ সময় নবজাতকদের বাবা-মা ও চিকিৎসক চার নবজাতকের নামকরণ করতে বলেন। সবার অনুরোধে বাংলাদেশি পাখিদের নামে তাদের নামকরণ করি।’

জেলা প্রশাসকের সশরীর উপস্থিত হয়ে খোঁজ নেওয়ায় নবজাতকদের বাবা-মা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। স্ত্রী ও সন্তানেরা বর্তমানে সুস্থ আছে জানিয়ে নবজাতকদের বাবা মাহবুল হোসেন বলেন, ‘বাচ্চা ডেলিভারির খরচ নিয়ে খুপ দুশ্চিন্তায় ছিলাম। আমার ট্যাকা-পয়সার অবস্থা খারাপ জানতি পাইরে ডিছি ছার (ডিসি স্যার) ১০ হাজার ট্যাকা দিয়েচে। ডিছি ছার ট্যাকা দিয়ার পর ডাক্তার আকলিমা আর হাসপাতালে ম্যানেজার ট্যাকা নেবেন না বলে জানিয়েছেন। আমার মেয়েগের জন্যি সবার কাচে দুয়া চাই।’