বঙ্গোপসাগরে জেলের বড়শিতে সোয়া লাখ টাকার পোয়া মাছ

বঙ্গোপসাগরের সোয়াচ অব নো গ্রাউন্ড এলাকায় জেলের বড়শিতে উঠে আসা কালো পোয়া মাছ। মাছ দুটি সোয়া লাখ টাকায় বিক্রি হয়েছেছবি: সংগৃহীত

পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকত-সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরে দুটি বড় আকারের কালো পোয়া মাছ ধরা পড়েছে। বঙ্গোপসাগরের সোয়াচ অব নো গ্রাউন্ড এলাকায় একটি মাছ ধরার ট্রলারের জেলে লক্ষ্মী মাঝির বড়শিতে গত সোমবার মাছ দুটি ধরা পড়ে। আজ শনিবার সকালে সাগর থেকে মাছ নিয়ে তিনি মহিপুর মৎস্য বন্দরে ফিরে আসেন।

লক্ষ্মী মাঝি প্রথম আলোকে বলেন, কুতুবদিয়া ফিশের মালিকানাধীন এফবি মায়ের দোয়া ট্রলার নিয়ে তাঁরা ১০-১২ জন জেলে বঙ্গোপসাগরের সোয়াচ অব নো গ্রাউন্ড এলাকায় মাছ ধরতে যান। এরপর সাগরবক্ষে হাজারি বড়শি ফেলেন। ৬-৭ ঘণ্টা পর বড়শি তুললে অন্য মাছের সঙ্গে বড় আকারের দুটি পোয়া মাছ ধরা পড়ে।

কুতুবদিয়া ফিশের মালিক মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, সাগর থেকে ফেরার পর লক্ষ্মী মাঝি মাছ দুটি নিয়ে তাঁর আড়তে আসেন। সাড়ে ৫ হাজার টাকা কেজি দরে মাছ দুটি ১ লাখ ২৪ হাজার টাকায় বিক্রি করা হয়। ছোট আকারের কালো পোয়াটির ওজন ছিল ৯ কেজি এবং বড় আকারের মাছটির ওজন ছিল ১৪ কেজি ৬৫০ গ্রাম। দুটি মাছ মিলিয়ে মোট ওজন হয়েছে ২৩ কেজি ৬৫০ গ্রাম। মহিপুর মৎস্য বন্দরের মাছ ব্যবসায়ী মো. শাহ আলম হাওলাদার মাছ দুটি কিনে নেন।

সমুদ্রের নীল অর্থনীতি ও জীববৈচিত্র্য নিয়ে কাজ করা আন্তর্জাতিক গবেষণাপ্রতিষ্ঠান ওয়ার্ল্ডফিশের সহযোগী প্রতিষ্ঠান ইকোফিশ-২ অ্যাকটিভিটির পটুয়াখালী জেলার সহযোগী গবেষক সাগরিকা স্মৃতি বলেন, কালো পোয়াকে সমুদ্রের স্বর্ণ বলা হয়। এর বৈজ্ঞানিক নাম হচ্ছে প্রোটোনিবিয়া ডাইকেনথাস (Protonibea Diacanthus)। ইংরেজি নাম ব্ল্যাকস্পটেড ক্রোকার (Blackspotted Croaker)। এটি মূলত ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকায় বেশি পাওয়া যায়। মাছটি বাংলাদেশ উপকূলের সেন্ট মার্টিন চ্যানেলেও বেশি পাওয়া যায়। মাছটির বায়ুথলি সাধারণত ইউরোপসহ হংকং, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুরে রপ্তানি হয়। বায়ুথলি থেকে বিশেষ ধরনের সার্জিক্যাল সুতা ও আইসিনগ্লাস (Isinglass) তৈরি করা হয়। মাছটি সর্বোচ্চ ১ দশমিক ৫ মিটার লম্বা ও ওজনে ৪৫ কেজি পর্যন্ত হতে পারে।

মাছটির ক্রেতা শাহ আলম হাওলাদার বলেন, ‘বিদেশে পোয়া মাছের চাহিদা প্রচুর। আমরা বিদেশে রপ্তানির জন্য মাছ দুটি কিনেছি। আমরা যে টাকায় কিনেছি, এ মাছের দাম বিদেশে আরও বেশি।’