‘ফ্রিডম অব দ্য সিটি অব লন্ডন’ সম্মাননা পেলেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত জেইন বখত

‘ফ্রিডম অব দ্য সিটি অব লন্ডন’ সম্মাননা গ্রহণ করছেন জেইন বখত। ১ সেপ্টেম্বর লন্ডনের গিল্ড হলে
ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাজ্যের প্রাচীনতম খেতাব ‘ফ্রিডম অব দ্য সিটি অব লন্ডন’ সম্মাননা পেয়েছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত তরুণ সমাজসেবক জেইন বখত (২২)। লন্ডনের ঐতিহ্যবাহী গিল্ড হলে গত শুক্রবার (১ সেপ্টেম্বর) জেইন বখতের হাতে এই সম্মাননা তুলে দেওয়া হয়। এ সময় তাঁর পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

যুক্তরাজ্যের সিভিল সার্ভেন্ট জেইন বখত সুনামগঞ্জের বাসিন্দা যুক্তরাজ্যপ্রবাসী শাহাগীর বখত ফারুকের ছেলে। ছেলের সম্মাননা পাওয়ার তথ্য নিশ্চিত করে শাহাগীর বখত মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, সিটি অব লন্ডন করপোরেশন ফ্রিডম অব দ্য সিটি অব লন্ডন খেতাব দিয়ে থাকে। ১২৩৭ সালে শুরু হওয়া এই সম্মাননা ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত শুধু ব্রিটিশ ও কমনওয়েলথ নাগরিকদের জন্য ছিল। ১৯৯৬ সালের পর এটি সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ, প্রিন্স ফিলিপ, রানিমাতা কুইন এলিজাবেথ, কিং চার্লস, প্রিন্সেস ডায়না, উইনস্টন চার্চিল, ক্লিমেন্ট অ্যাটলি, মার্গারেট থ্যাচার, ফুটবলার হ্যারি কেইন, নেলসন ম্যান্ডেলা, স্টিফেন হকিংসসহ অনেক বিখ্যাত ব্যক্তি সিটি অব লন্ডন সম্মাননায় ভূষিত হন।

পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ‘ফ্রিডম অব দ্য সিটি অব লন্ডন’ সম্মাননা হাতে জেইন বখত
ছবি: সংগৃহীত

শাহাগীর বখতের বাড়ি সুনামগঞ্জ পৌর শহরের আরপিননগর এলাকায়। তাঁদের পরিবারটি সুনামগঞ্জে ‘বখত পরিবার’ হিসেবে পরিচিত। জেইন বখতের চাচা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হুমায়ুন বখত মুহিত। আরেক চাচা নাদের বখত সুনামগঞ্জ পৌরসভার বর্তমান মেয়র।

নাদের বখত প্রথম আলোকে বলেন, ‘জেইন বখতের এই অর্জন আমাদের জন্য অত্যন্ত সম্মানের। পারিবারিকভাবে আমরা অবশ্যই গর্বিত। পাশাপাশি বাঙালি হিসেবে এটি সবার জন্য গর্বের। তাঁর অবস্থান থেকে তিনি নিশ্চয়ই বাংলাদেশের সম্মান-মর্যাদা বৃদ্ধিতে কাজ করবেন।’

আরও পড়ুন

শাহাগীর বখতের আরেক ছেলে শাহনান বখত (৪০) যুক্তরাজ্যের সিটি অব লন্ডন করপোরেশনের কাউন্সিলম্যান। গত বছরের ২৪ মার্চ এই নির্বাচন হয়। তাঁর ওয়ার্ড ব্রড স্ট্রিট। তিনি সেখানকার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকের একজন ভাইস চেয়ারম্যান। শাহনান বখত দ্বিতীয় বাঙালি, যিনি করপোরেশনের এই পদে বিপুল ভোটে নির্বাচিত হন। করপোরেশনের নীতিনির্ধারক হিসেবে কাজ করেন কাউন্সিলম্যানরা।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, শাহাগীর বখত একসময় সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজে অধ্যাপনা করেছেন। ১৯৭৩ সালে যুক্তরাজ্যে যান। যুক্তরাজ্যের কনজারভেটিভ পার্টির মনোনয়ন নিয়ে তিনি দুইবার পার্লামেন্ট নির্বাচন করেছেন। তিনি ব্রিটিশ-বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্সের সাবেক চেয়ারম্যান ও বর্তমানে প্রধান উপদেষ্টা। তাঁর দুই ছেলে ও এক মেয়ে। সবার জন্ম ও বেড়ে ওঠা যুক্তরাজ্যে। মেয়ে তাহিরা লুথফানা ইভা রয়েল লন্ডন হাসপাতালের ফার্মাসিউটিক্যালস টেকনিশিয়ান।