কর্মচারীকে মারধরের প্রতিবাদে হয়রানিমুক্ত কর্মপরিবেশের দাবি জানালেন ইউএনও

যশোরের মণিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয়ের অ্যাকাউন্ট্যান্ট ক্লার্ক শাহীন আলমকে মারধরের প্রতিবাদে উপজেলা পরিষদের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা মানববন্ধন করেছেন। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে উপজেলা পরিষদ চত্বরে শহীদ মিনারের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক মোতাহারুল ইসলামের বিরুদ্ধে শাহীন আলমকে মারধরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভুক্তভোগীর দাবি, গতকাল বুধবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে ইউএনও কার্যালয়-সংলগ্ন শহীদ মিনারের সামনে তাঁকে মারধর করা হয়।

মানববন্ধনে ইউএনও নিশাত তামান্না, সহকারী কমিশনার (ভূমি) নিয়াজ মাখদুমসহ উপজেলা পরিষদের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা অংশ নেন। মানববন্ধন চলাকালে ইউএনও নিশাত তামান্না বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, ‘শাহীন আলমকে মারধরের ঘটনার প্রতিবাদে উপজেলা পরিষদে কর্মরত সবাই একত্রিত হয়ে মানববন্ধন করছি। আমরা সরকারি দায়িত্ব যথাযথভাবে পালনের জন্য হয়রানিমুক্ত সুষ্ঠু কর্মপরিবেশ দাবি করছি।’

ইউএনও আরও বলেন, ‘আমরা এখনো মামলায় যাইনি। ডিসি স্যারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছি। আশা করছি একটা সিদ্ধান্ত আসবে।’

শাহীন আলম বলেন, ‘গতকাল অফিস শেষে বিকেলে অফিসের সামনের শহীদ মিনারে দাঁড়িয়ে অফিস সহকারী ও সহকর্মী সাইফুল ইসলামের সঙ্গে কথা বলছিলাম। এ সময় সাইফুলের মুঠোফোনে মোতাহারুল ইসলামের কল আসে। তাঁর সঙ্গে কথার একপর্যায়ে সাইফুল বলে ওঠেন, “শাহীন আমার সামনে আছে।” তখন মোতাহারুল আমার সঙ্গে কথা বলতে চাইলে সাইফুল আমাকে মুঠোফোনটি ধরিয়ে দেন।’

শাহীন আরও বলেন, ‘মোতাহারুলের সঙ্গে আমার আগে কখনো কথা হয়নি। ফোন ধরতেই তিনি আমাকে গালমন্দ করতে থাকেন। আমি প্রতিবাদ করলে নানা হুমকি দিয়ে আমার অবস্থান জানতে চান। আমি অফিসের সামনে থাকার কথা বললে তিনি ফোন কেটে দেন। বিষয়টি নিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে আমি উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান মিন্টু ভাইকে কল করি। কথা বলা শুরু করলে দেড় থেকে দুই মিনিটের মধ্যে মোতাহারুল ইসলামের নেতৃত্বে ১৫-২০ জন আমাদের কাছে আসেন। তখন তাঁর সঙ্গে থাকা রিপন সরদার আমার মাথায় থাপ্পড় মারেন। অন্যরা ধাক্কাধাক্কি ও টানাহেঁচড়া করতে থাকেন। আসাদুজ্জামান মিন্টু ভাই মুঠোফোনে কথা বলার পর তাঁরা সেখান থেকে চলে যান।’

অভিযোগ অস্বীকার করে মোতাহারুল ইসলাম বলেন, শাহীন আলমের সঙ্গে ওই ধরনের ঘটনা ঘটেনি। তাঁর সঙ্গে মুঠোফোনে কোনো কথাই হয়নি। অভিযোগটি মনগড়া।

এদিকে শাহীন আলমকে মারধরের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে মণিরামপুর পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য রিপন সরদারকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। আজ দুপুরে মণিরামপুর পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মো. কামরুল গাজী ও সদস্যসচিব মো. মাসুদ গাজী স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়েছে।