শ্রমিক নেতা শহিদুল হত্যার তদন্তের দায়িত্ব পেয়ে নতুন করে মাঠে নেমেছে শিল্প-পুলিশ

গাজীপুরে সন্ত্রাসী হামলায় নিহত শ্রমিক নেতা শহিদুল ইসলাম
ছবি: সংগৃহীত

গাজীপুরের টঙ্গীতে শ্রমিক নেতা শহিদুল ইসলাম হত্যা মামলার তদন্তভার পেয়ে নতুন করে মাঠে নেমেছে শিল্প-পুলিশ। হত্যার রহস্য উদ্‌ঘাটনে দফায় দফায় ঘটনাস্থল ও পোশাক কারখানাটি পরিদর্শন করছেন গাজীপুর শিল্প-পুলিশের সদস্যরা। পাশাপাশি মামলার বাদীপক্ষ, প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় ব্যক্তিরদের সঙ্গে কথা বলাসহ বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করছেন তাঁরা। তবে তদন্তের বিষয়ে এখনই মুখ খুলতে চাচ্ছে না শিল্প-পুলিশ।

শহিদুল ইসলাম হত্যার ঘটনায় গত ২৬ জুন টঙ্গী পশ্চিম থানায় মামলা হয়। ২৭ জুন মামলাটি হস্তান্তরের জন্য গাজীপুর মহানগর পুলিশের কাছে আবেদন করে শিল্প-পুলিশ। সেই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত বৃহস্পতিবার রাতে মামলাটির দায়িত্ব পায় গাজীপুর শিল্প-পুলিশ। এরপর গতকাল শুক্রবার ও আজ শনিবার কয়েক দফায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন শিল্প-পুলিশের সদস্যরা। এ সময় একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলেছেন তাঁরা। সংগ্রহ করেছেন বিভিন্ন আলামত।

শিল্প পুলিশের টঙ্গী জোনের সহকারী পুলিশ সুপার মো. মোশারফ হোসাইন প্রথম আলোকে বলেন, ‘কল-কারখানায় কোনো ঘটনা ঘটলে নিয়মানুযায়ী আমরা মামলার দায়িত্ব পাই। সেই সূত্রে গত ২৭ জুন মামলাটি আমাদের কাছে হস্তান্তরের জন্য গাজীপুর মহানগর পুলিশ কমিশনার বরাবর আবেদন করি। তারই পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার রাতে মামলাটি আমাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। আমরা প্রকৃত ঘটনা উদ্‌ঘাটনে কাজ করছি। সংশ্লিষ্ট সবাইকে জিজ্ঞাসাবাদ করছি।’

শহিদুল ইসলাম ছিলেন বাংলাদেশ গার্মেন্টস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল শ্রমিক ফেডারেশনের গাজীপুর জেলা শাখার সভাপতি। গত ২৫ জুন টঙ্গীর সাতাইশ বাগানবাড়ী এলাকার ‘প্রিন্স জ্যাকার্ড সোয়েটার লিমিটেড’ কারখানায় শ্রমিকদের পাওনা টাকা আদায়ে কাজ করতে গিয়ে সন্ত্রাসীদের হামলায় নিহত হন তিনি। এ ঘটনায় ২৬ জুন টঙ্গী পশ্চিম থানায় ৬ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত সাতজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সভাপতি কল্পনা আক্তার। এখন পর্যন্ত মামলার আসামি ধরা পড়েছে মাত্র একজন।

আরও পড়ুন

মামলার বাদী কল্পনা আক্তারের অভিযোগ ছিল, মামলাটির তদন্ত নিয়ে গড়িমসি করছিল টঙ্গী পশ্চিম থানা-পুলিশ। মামলার এজাহার থেকে স্থানীয় এক প্রভাবশালী ব্যক্তির নাম বাদ দেওয়া, আসামিদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা না করাসহ পক্ষপাতমূলক আচরণের অভিযোগ ছিল থানার ওসি শাহ আলমের বিরুদ্ধে। এর মধ্যেই গত বৃহস্পতিবার রাতে মামলাটি হস্তান্তর করা হয় শিল্প-পুলিশের কাছে।

এ বিষয়ে কল্পনা আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, ‘টঙ্গী পশ্চিম থানা পুলিশ ইতিমধ্যে ১০/১২ দিন খেয়ে ফেলছে। এখন মামলা শিল্প-পুলিশের কাছে গেছে। দু-একদিন না গেলে মামলার অগ্রগতি কিছুই বোঝা যাচ্ছে না। বাংলাদেশ পুলিশের শক্তি আছে। আমার বিশ্বাস, তারা আসামিদের ধরতে পারবে।’

মামলাটি শিল্প পুলিশে হস্তান্তরের বিষয়ে জানতে চাইলে গাজীপুর মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. মাহবুব আলম প্রথম আলোকে বলেন, শিল্প সংক্রান্ত যে কোনো বিরোধ বা মামলাগুলো শিল্প– পুলিশ দেখে। এটা তাঁদের দেখার এখতিয়ার নেই। প্রাথমিকভাবে তাঁদের থানায় মামলা হয় বা তদন্ত করা হয়। এ ঘটনার পরপরই শিল্প-পুলিশ তাঁদের কাছে মামলা হস্তান্তরের জন্য আবেদন করেছিল। নিয়মানুযায়ী তাদের কাছে মামলা হস্তান্তর করা হয়েছে।