মোগল ধাঁচের ১৫ গম্বুজের হামিদিয়া তাজ মসজিদ

মোগল ধাঁচে গড়ে তোলা হামিদিয়া তাজ মসজিদটিতে রয়েছে ছোট-বড় ১৫টি গম্বুজছবি: প্রথম আলো

সড়কের পাশেই অবস্থিত মসজিদটি। স্থাপনাজুড়েই বাহারি রঙের ছড়াছড়ি। সামনে রয়েছে দৃষ্টিনন্দন সুউচ্চ দুটি মিনার, যা সহজেই দৃষ্টি কাড়ে যে কারও। হামিদিয়া তাজ জামে মসজিদ নামের এই ধর্মীয় স্থাপনা অবস্থিত চট্টগ্রাম নগরের নবাব সিরাজ-উদ-দৌলা সড়কের চন্দনপুরা এলাকায়। এটি তাই পরিচিত চন্দনপুরা মসজিদ নামে। তবে মসজিদ-ই-সিরাজ উদ-দৌলা নামেও চেনেন অনেকে।

মোগল ধাঁচে গড়ে তোলা মসজিদটিতে রয়েছে ছোট-বড় ১৫টি গম্বুজ। মাঝখানে থাকা গম্বুজটি বেশ বড়। গম্বুজের চারপাশে লেখা রয়েছে জীবদ্দশায় জান্নাতের সুসংবাদ পাওয়া ১০ সাহাবির নাম, ইসলামি পরিভাষায় যাঁদের বলা হয় ‘আশরায়ে মুবাশশারা’। প্রতিটি গম্বুজে যাওয়ার জন্য সিঁড়িও রয়েছে।

মসজিদের ভেতরে-বাইরে দেখা যায় লতাপাতা আর ফুলের নকশা করা নানা কারুকাজ। লাল, সাদা, সবুজ, হলুদসহ নানা রং ব্যবহার করা হয়েছে এতে। দরজা-জানালা, মিনার-মিহরাব সবখানেই বর্ণিল কারুকাজ চোখে পড়ে।

গত বৃহস্পতিবার মসজিদটির প্রশস্ত ফটক দিয়ে ভেতরে ঢুকে দেখা যায়, দুপাশে রয়েছে ওপরে ওঠার সিঁড়ি। বাঁ দিকে গিয়ে কিছুটা সামনে এগোলেই অজুখানা। নিচতলায় নামাজঘরে ঢোকার তিনটি দরজা রয়েছে। ভেতরে দুপাশের আটটি জানালাও বেশ বড়। এসব জানালা দিয়ে মসজিদে আলো-বাতাস চলাচল স্বাভাবিক থাকার কথা। তবে স্থাপনা নির্মাণের কারণে বর্তমানে উত্তর পাশের জানালাগুলো দিয়ে আলো-বাতাস চলাচল ব্যাহত হচ্ছে।

মসজিদে মাঝখানে থাকা গম্বুজটি বেশ বড়
ছবি: প্রথম আলো

মসজিদটির সামনে কথা হয় বাকলিয়া এলাকার বাসিন্দা আজিজুল কাদিরের সঙ্গে। পেশায় চিত্রশিল্পী আজিজুল আসরের নামাজ আদায় করতে মসজিদটিতে এসেছেন। জানতে চাইলে তিনি বলেন, মসজিদজুড়ে বর্ণিল কারুকাজ তাঁকে মোহিত করে। তাই মাঝেমধ্যে মসজিদটি দেখতে আসেন। একই সঙ্গে নামাজও আদায় করেন। পুরোনো মসজিদে নামাজ আদায়ে একধরনের ভালো লাগা কাজ করে।

চন্দনপুরা এলাকার বাসিন্দা এরফানুর রহমান বলেন, পুরোনো মসজিদটির ছবি প্রায়ই পত্রপত্রিকা, বই, ক্যালেন্ডারসহ নানা ধরনের প্রকাশনায় ব্যবহৃত হয়। তাই দেশ-বিদেশের অনেক পর্যটক এটি দেখতে আসেন।

মসজিদের সামনে রয়েছে দৃষ্টিনন্দন সুউচ্চ দুটি মিনার, যা সহজেই দৃষ্টি কাড়ে যে কারও
ছবি: প্রথম আলো

হামিদিয়া তাজ মসজিদটি প্রথমে ১৮৭০ সালে নির্মাণ করা হয়। নির্মাণ করেন আবদুল হামিদ নামের এক ব্যক্তি। তবে ১৯৫০ সালে সংস্কারের মাধ্যমে গড়ে তোলা অবয়বটিই এখন টিকে আছে। ফটকের একটি অংশে ১৯৫০ লেখা রয়েছে। মসজিদটি তখন সংস্কার করেন আবদুল হামিদেরই বংশধর আবু সৈয়দ দোভাষ। সংস্কারকাজের জন্য ভারতের লক্ষ্ণৌ থেকে মোগল ঘরানার কারিগর আনা হয়েছিল বলে জানা যায়।