শরীয়তপুরে ডিবির অভিযানে মৃত্যুর ঘটনায় অপমৃত্যুর মামলা, পুলিশের তদন্ত কমিটি

মিলন ব্যাপারীর স্বজনেরা কান্নায় ভেঙে পড়েছেন। রোববার সকালে শরীয়তপুর সদর হাসপাতাল মর্গের সামনেছবি: প্রথম আলো

শরীয়তপুরের জাজিরায় ডিবি পুলিশের মাদকবিরোধী অভিযানের সময় এক ব্যক্তির মৃত্যুর ঘটনা তদন্তে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ওই ঘটনায় জাজিরার পদ্মা সেতু দক্ষিণ থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা করা হয়েছে।

উপজেলার নাওডোবা এলাকায় পদ্মা সেতুর পাশে গত শনিবার রাতে পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) একটি দলের অভিযানের সময় মিলন ব্যাপারী (৫৫) নামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়। পরিবারের অভিযোগ, অভিযান চালানোর সময় ডিবি পুলিশের সদস্যরা তাঁকে মারধর করেন এবং তাঁর মৃত্যু হয়।

মিলন ব্যাপারী পশ্চিম নাওডোবা এলাকার আমজাদ ব্যাপারীর ছেলে। পদ্মা সেতুর রেলের ভায়াডাক্টের ৪৮ নম্বর পিয়ারের পাশে তাঁর বসতবাড়ি। সেখানেই একটি ছোট মুদিদোকান চালাতেন তিনি।

গতকাল রোববার শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে লাশের ময়নাতদন্ত করা হয়। সন্ধ্যায় লাশটি নাওডোবা এলাকার একটি গণকবরস্থানে দাফন করেন স্বজনেরা। এ ঘটনায় গতকাল সন্ধ্যায় মৃত মিলন ব্যাপারীর ছেলে আল আমীন একটি অপমৃত্যুর মামলা করেন। এর আগে বিকেলে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে ঘটনাটি তদন্ত করার জন্য একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিতে দুজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও একজন পরিদর্শক আছেন।

আরও পড়ুন

আল আমীন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের সামনেই ডিবি পুলিশের সদস্যরা বাবাকে মারধর করেছেন। তাঁদের মারধরের কারণে বাবা অসুস্থ হয়ে মারা যান। এ বিষয়ে আমরা পদ্মা সেতু দক্ষিণ থানায় অভিযোগ করেছি। পুলিশ জানিয়েছে, ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বর্তমানে একটি অপমৃত্যু মামলা করতে বলেছিল। তাই আমি একটি অপমৃত্যুর মামলা করেছি। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন আসার পর পুলিশ কোনো ব্যবস্থা না নিলে আমরা আদালতের দারস্থ হবো।’

এ বিষয়ে শরীয়তপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) আবিদুল ইসলাম বলেন, এক মাদক বিক্রেতাকে গ্রেপ্তারের সময় তাঁর এক আত্মীয় ডিবি পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে বাগ্‌বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। তিনি আগে থেকেই হৃদ্‌রোগ ও হাঁপানি রোগে আক্রান্ত ছিলেন। ওই কারণে তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে চিকিৎসক জানিয়েছেন। তারপরও পুলিশের কোনো সদস্যের দায়িত্ব পালনে কোনো গাফিলতি ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখতে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন ও কমিটির তদন্ত প্রতিবেদন পেলে বোঝা যাবে, ওই ব্যক্তির মৃত্যু কীভাবে হয়েছে। এরপর আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।