জেলা পরিষদ নির্বাচনে আ.লীগের একমাত্র নারী প্রার্থী পিরোজপুরের সালমা

সালমা রহমান
ছবি: সংগৃহীত

পিরোজপুর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন শহীদ পরিবারের সদস্য ও নারীনেত্রী সালমা রহমান ওরফে হ্যাপী। সারা দেশের ৬১টি জেলা পরিষদ নির্বাচনে দলের একমাত্র নারী প্রার্থী তিনি।

গতকাল শনিবার রাতে আওয়ামী লীগের সংসদীয় ও স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডের সভা শেষে আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করা হয়।

সালমা রহমান জাতীয় মহিলা পরিষদের পিরোজপুর জেলার সাধারণ সম্পাদক এবং পৌর আওয়ামী লীগের সদস্য। তিনি পিরোজপুর সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মজিবুর রহমানের স্ত্রী। ১৯৭১ সালের ২৩ মার্চ পিরোজপুরে প্রথম স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলনকারী তৎকালীন মহকুমা ছাত্রলীগের সভাপতি শহীদ ওমর ফারুকের বোন তিনি।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ৪ সেপ্টেম্বর থেকে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে দলীয় মনোনয়ন ফরম বিক্রি শুরু করে আওয়ামী লীগ। পিরোজপুরের সাবেক জেলা পরিষদের প্রশাসক ও জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মহিউদ্দিন মহারাজ, নারীনেত্রী সালমা রহমান, নেছারাবাদ উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হাসিনা মনি, স্বরূপকাঠি পৌর আওয়ামী লীগের সদস্য শামসুন্নাহার বেগম ও ভান্ডারিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আবদুল্লাহ আল মাসুদ দলীয় মনোনয়ন সংগ্রহ করে জমা দেন। এর মধ্যে সালমা রহমানকে চেয়ারম্যান পদে শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন দেওয়া হয়।

সালমা রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু যখন প্রথম পিরোজপুর এসে আমার বাবার সঙ্গে কথা বলেন, তিনি আব্বাকে জিজ্ঞেস করেন কী চান? আব্বা বলেছিলেন, দেশের জন্য ছেলে শহীদ হয়েছে। আমার চাওয়ার কিছু নেই। তখন বঙ্গবন্ধু তাঁর গায়ের কোটটি খুলে আব্বাকে পরিয়ে দিয়েছিলেন। ১৯৮২ সালে আমার (সালমা) বিয়ের সময় আব্বা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দাওয়াত দিয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রী আমাকে একটি স্টিলের আলমারি উপহার পাঠিয়েছিলেন। সেটা এখনো আমার বাসায় আছে।’ তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী নারীর ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে তাঁকে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন দিয়েছেন। তিনি তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞ।

এর আগে ২০১৬ সালে আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী সাবেক সংসদ সদস্য মো. শাহ আলমকে হারিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী মহিউদ্দিন মহারাজ বিজয়ী হন। ওই নির্বাচনে মহিউদ্দিন মহারাজ দলীয় মনোনয়ন চেয়ে বঞ্চিত হয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছিলেন। এবার ৭৪৭ জন ভোটারের মধ্যে ৭০৪ জনের স্বাক্ষর নিয়ে একটি চিঠি দলের সভাপতি শেখ হাসিনার কাছে পাঠিয়েছিলেন তিনি। কয়েকটি জাতীয় দৈনিকেও বিজ্ঞাপন দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা করেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনি মনোনয়ন পাননি।

প্রসঙ্গত, আগামী ১৭ অক্টোবর জেলা পরিষদের নির্বাচনে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ সময় ১৫ সেপ্টেম্বর। সংশোধিত আইন অনুযায়ী এবার জেলা পরিষদের একজন চেয়ারম্যান, সাত উপজেলায় সাতজন সাধারণ সদস্য ও তিনজন নারী সদস্য নির্বাচিত হবেন। চলতি বছর পিরোজপুর জেলা পরিষদের মোট ভোটার ৭৪৭ জন।