কার্যালয়ে বসে মাদক গ্রহণের সত্যতা পাওয়ায় ভাইস চেয়ারম্যানকে কারণ দর্শানোর চিঠি

হাতীবান্ধা উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন
ছবি: সংগৃহীত

সরকারি কার্যালয়ে বসে মাদক গ্রহণের অভিযোগের তদন্তে প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন ওরফে মিরুকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় সরকার বিভাগের এই নোটিশ পাওয়ার ১০ কার্যদিবসের মধ্যে তাঁকে জবাব দিতে বলা হয়েছে।

গত ১৯ মার্চ স্থানীয় সরকার বিভাগের উপসচিব মাহবুবা আইরিন স্বাক্ষরিত কারণ দর্শানোর নোটিশটি গতকাল সোমবার ডাকযোগে পেয়েছেন ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন। একই সঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) দপ্তরেও নোটিশের একটি অনুলিপি এসে পৌঁছেছে। ইউএনও নাজির হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে হাতীবান্ধা উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন নোটিশ পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। নিজেকে নির্দোষ দাবি করে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি মাদক নিইনি। শারীরিক সমস্যার জন্য আমি হারবাল ওষুধ নিয়েছিলাম। এটাকে ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।’

গত জানুয়ারির শেষ দিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন নিজের সরকারি কার্যালয়ে মাদক মামলার এক আসামির হাত থেকে ফেনসিডিলের বোতল নিচ্ছেন। উপজেলা পরিষদের চারতলা প্রশাসনিক ভবনের নিচতলায় ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেনের কার্যালয়। সেখানে বসে প্রতিনিয়ত তিনি মাদক সেবন করতেন বলে অভিযোগ রয়েছে। বহুতল এই ভবনে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, ইউএনওসহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তাদের কার্যালয় রয়েছে।

উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, ওই ভিডিওর সূত্র ধরে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হলে রংপুর বিভাগীয় কমিশনারের নির্দেশে লালমনিরহাট জেলা প্রশাসন এক সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। তদন্তের দায়িত্ব পান লালমনিরহাট স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক মো. রফিকুল ইসলাম। গত ১৫ ফেব্রুয়ারি রংপুর বিভাগীয় কমিশনার মো. সাবিরুল ইসলাম ওই তদন্ত প্রতিবেদন স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব বরাবর পাঠান। তদন্তে অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে বলে উল্লেখ করা হয়। এর ভিত্তিতেই কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে বলে হাতীবান্ধা উপজেলা পরিষদ সূত্রে জানা গেছে।

কারণ দর্শানোর নোটিশে বলা হয়েছে, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগটি উপজেলা পরিষদ আইন অনুযায়ী অপরাধের শামিল। আইন অনুযায়ী কেন ভাইস চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, তা চিঠি পাওয়ার ১০ দিনের মধ্যে আনোয়ার হোসেনকে জবাব দিতে বলা হয়েছে। এ নিয়ে তিনি ব্যক্তিগত শুনানিতে ইচ্ছুক কি না, তা–ও জানাতে বলা হয়েছে।

ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়ার কথা শুনেছেন বলে জানালেও এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি হাতীবান্ধা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মশিউর রহমান।