নেত্রকোনায় মগড়া নদী খনন ও সৌন্দযবর্ধনের দাবিতে মানববন্ধন

নেত্রকোনা শহরে মগড়া নদী খননের দাবিতে মানববন্ধন হয়েছে। আজ মঙ্গলবার বেলা ১২টার দিকে মোক্তারপাড়ায় পৌরসভা কার্যালয়ের সামনেছবি: প্রথম আলো

নেত্রকোনা শহরে মগড়া নদী খনন করে দুই পাড়ে ওয়াকওয়ে (হাঁটার রাস্তা) নির্মাণ ও শহরের সৌন্দবর্ধনের দাবিতে মানববন্ধন হয়েছে। আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে মোক্তারপাড়ার পৌরসভা কার্যালয়ের সামনে এই কর্মসূচির আয়োজন করে সড়কে প্রকৃতি বাঁচাও আন্দোলন। মানববন্ধনে বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের সদস্যসহ নানা শ্রেণি-পেশার লোকজন অংশ নেন।

কর্মসূচিতে জেলা প্রেসক্লাবের সদস্যসচিব মাহবুবুল কিবরীয়া চৌধুরী সভাপতিত্ব করেন। আয়োজক সংগঠনের সভাপতি তানভীর জাহান চৌধুরী পরিচালনায় বক্তব্য দেন, জেলা মুক্তিযোদ্ধা ইউনিটের সাবেক কমান্ডার হায়দার জাহান চৌধুরী, জেলা সুজনের সভাপতি শ্যামলেন্দু পাল, নেত্রকোনা সরকারি কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক প্রধান ননী গোপাল সরকার, নেত্রকোনা সরকারি মহিলা কলেজের সহকারী অধ্যাপক খন্দকার অলি উল্লাহ, নেত্রকোনা সাহিত্য সমাজের সদস্য কামাল হোসাইন, জেলা উদীচীর সদস্য পল্লব চক্রবর্তী, কলেজ ছাত্রী বিদ্যুৎ খান প্রমুখ।

মগড়া নদী নেত্রকোনা শহরটিকে ঘিরে রেখেছে। এক সময়ের প্রাণচঞ্চল এ নদী এখন নিশ্চল ও অপরিচ্ছন্ন। প্রচুর ময়লা-আবর্জনা আর দখলে দূষিত হয়ে উঠেছে।
মানববন্ধনে জানানো হয়, শহরে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার অংশে নদীর দুই পাড়ের জায়গা দখলদারদের কবলে ছিল। কয়েক বছর আগে বিশেষত নাগড়া আনন্দ বাজারসংলগ্ন, নাগড়া প্রাথমিক বিদ্যালয় এলাকা, নাগড়া থানা মোড়, ছোটবাজার, তেরিবাজার, স্টেশন রোড, মোক্তারপাড়া, কাটলি ও পাটপট্টি এলাকায় প্রায় ৩১৫টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে প্রশাসন। অবশ্য উচ্চ আদালতের রিটের কারণে এখনো কয়েকটি স্থাপনা উচ্ছেদ সম্ভব হয়নি।

তবে স্থানীয় লোকজন জানান, অধিকাংশ অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ হলেও নদীটি এখনো বিপণ্ন। পাটপট্টি, কাটলি, মোক্তারপাড়া, থানার মোড় সেতু এলাকা, ঘুষের বাজার এলাকায় কাঁচা শাকসবজির বর্জ্য, কারখানার বর্জ্য, হাসপাতাল ও ক্লিনিকের বর্জ্য, গৃহস্থালির বর্জ্যসহ সব ধরনের আবর্জনা মগড়ায় ফেলা হচ্ছে। পৌরসভার ১২টি নালার পানি কোনো রকম পরিশোধন ছাড়াই নদীতে পড়ে। পৌর নালার সঙ্গে কোনো কোনো বাড়ির পয়োনালার সংযোগ আছে। ফলে মলমূত্র এসে পড়ছে নদীতে। পাশাপাশি মাছ ধরা ও চাষের জন্য বাঁশের খুঁটি ও জাল দিয়ে নদীর পানি প্রবাহে বাধার সৃষ্টি করা হয়েছে। নদীতে কচুরিপানা ও জলজ উদ্ভিদ জমে ডোবার মতো হয়েছে। নদীর পানি থেকে দুর্গন্ধ ছড়ায়।

হায়দার জাহান চৌধুরী বলেন, প্রায় আট বছর আগে মোক্তারপাড়া এলাকায় নদীর ওপর সাড়ে ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে সেতু নির্মাণ করা হয়েছিল। তখন দুই পাশে সংযোগ সেতু তৈরিতে চারটি বড় বড় পিলার করা হয়েছিল। এত দিনেও এগুলো সরানো হলো না। সওজের কর্মকর্তাদের গাফিলতি ও দায়িত্বহীনতায় সেতুটি নিচু করে নির্মাণ করা হয়েছে। এতে নৌযান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। নদীটি আরও প্রাণ হারাচ্ছে।

মাহবুবুর কিবরিয়া চৌধুরী বলেন, ‘খনন করে মগড়া নদীর প্রাণপ্রবাহ ফিরিয়ে আনতে হবে। শহরের মধ্যে বহমান নদীর দুই পাশে ওয়াকওয়ের ব্যবস্থা, শহরের সৌন্দযবর্ধনের ব্যবস্থা করা আমাদের দীর্ঘদিনের দাবি।’