রোদঝলমল সকালে হঠাৎ কালবৈশাখীর আঘাত, যুবকের মৃত্যু

কালবৈশাখীর তাণ্ডবে উড়ে গেছে টিনের চাল। আজ রোববার সকালে বাগেরহাট শহরের পুরাতন কোর্ট এলাকায়ছবি: প্রথম আলো

সকাল আটটা। রোদঝলমল আকাশ। ধীরে ধীরে রোদের তাপ বাড়ছে। নয়টা বাজতেই হঠাৎ চারদিক অন্ধকার হতে শুরু করে। ঘড়ির কাঁটায় তখন ৯টা ৩৮ মিনিট। চারপাশে ঘুটঘুটে অন্ধকার, যেন গভীর রাত নেমেছে। সামান্য বৃষ্টির পরই দমকা হাওয়া আর বজ্রপাতে সবখানে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

আজ রোববার সকালে আকস্মিক কালবৈশাখীতে বাগেরহাটজুড়ে এমন চিত্র হয়। ঝড়ে বিভিন্ন এলাকায় ঘরের চাল ও গাছপালা উপড়ে গেছে। ভেঙে পড়েছে বৈদ্যুতিক খুঁটি, বিলবোর্ড। বাগেরহাট সদর ও কচুয়া উপজেলায় দেড় শতাধিক কাঁচা ও আধপাকা ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। ঝড়ের সময় বজ্রপাতে একজনের মৃত্যু হয়েছে। তবে ঝড়ে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ তাৎক্ষণিকভাবে জানাতে পারেনি প্রশাসন।

মারা যাওয়া ব্যক্তির নাম লিকচান সরদার (৩৫)। তিনি কচুয়া উপজেলার চর সোনারকুড় গ্রামের বাসিন্দা। ঝড়ের সময় গ্রামের মাঠে থাকা গরু আনতে গিয়ে বজ্রপাতে তিনি নিহত হন।

এদিকে ঝড়ের পর থেকে বাগেরহাট পৌর শহরসহ সদর উপজেলার প্রায় সব এলাকায় বিদ্যুৎ-বিচ্ছিন্ন আছে। শহরের আলিয়া মাদ্রাসা রোডের সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘হঠাৎ মনে হলো রাত নেমে এল। দিনের বেলা এমন ঘন অন্ধকার আগে দেখিনি। এর মধ্যে বাতাস শুরু হলে টিনের চাল উড়ে যায়। ঘরের সব মালামাল নষ্ট হয়ে গেছে। এখন থাকার মতো কোনো জায়গাও নেই। পরিবার নিয়ে কোথায় যাব? ঈদের আগে এমন ক্ষতি; কীভাবে কী করব, বুঝতে পারছি না।’

বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মো. খালিদ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, আকস্মিক ঝড়ে সদর উপজেলার বেশ কয়েকটি এলাকার ঘরবাড়ি, গাছপালা উপড়ে গেছে। বৈদ্যুতিক খুঁটি ভেঙে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ আছে। ঘূর্ণিঝড়কবলিত এলাকায় গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের তালিকা করতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও জনপ্রতিনিধিদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। কচুয়াতে বজ্রপাতে একজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। প্রয়োজনীয় ত্রাণসামগ্রী মজুত আছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারে সহায়তার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।