কুষ্টিয়ার দৌলতপুর
কমিটি গঠনে অনিয়মের অভিযোগ
অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে নতুন কমিটির সভাপতি গতকাল সংবাদ সম্মেলন করেছেন।
জেলা কমিটির সম্মেলনের আগের দিন তড়িঘড়ি করে কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের গঠিত নতুন কমিটি নিয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে দলটির একাংশ। দীর্ঘ এক যুগ পর গঠিত এই কমিটির পদবঞ্চিত নেতা ও স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, এটা পকেট কমিটি। মাদকাসক্ত, সন্ত্রাসীদের নিয়ে এই কমিটি টাকার বিনিময়ে গঠন করা হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে নতুন কমিটির সভাপতি কমিটি গঠনের চার দিন পর গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা একটায় কুষ্টিয়া প্রেসক্লাবের আবদুর রাজ্জাক মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করেছেন।
গত সোমবার রাতে কুষ্টিয়া জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আক্তারুজ্জামান লাবু ও সাধারণ সম্পাদক সেলিম রেজা স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে দৌলতপুর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের ১৫ সদস্যের আংশিক কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়। এর পরদিন মঙ্গলবার জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দীর্ঘ এক যুগের বেশি সময় ধরে দৌলতপুর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের কোনো কমিটি ছিল না। ২০১৫ সালের দিকে একটি আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। এরপর কয়েকজন নেতা সংগঠনের কার্যক্রম চালিয়ে নেন। গত মঙ্গলবার জেলা কমিটির সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। হঠাৎ তার এক দিন আগে সোমবার দৌলতপুর উপজেলার আংশিক কমিটি গঠনের সংবাদ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। এই কমিটি দেখে উপজেলা আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের বেশির ভাগ শীর্ষ নেতা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তাঁরা বলেন, সাংগঠনিকভাবে এই কমিটি গঠন করা হয়নি।
এ ব্যাপারে জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের বর্তমান কমিটির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক সেলিম হোসেন বলেন, কেন্দ্রের নির্দেশে দৌলতপুরের আংশিক কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
দৌলতপুর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক পদপ্রত্যাশী আনিচুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, যাঁরা কমিটিতে স্থান পেয়েছেন, তাঁরা বিতর্কিত। অনেকের বিরুদ্ধে দলের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করা, মাদক সেবনসহ নানা অভিযোগ রয়েছে।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শরীফ উদ্দীন প্রথম আলোকে বলেন, ‘জেলা সম্মেলনের আগের রাতে আংশিক কমিটি দেওয়া একটা কৌশল। এটা গঠনতান্ত্রিক কমিটি হয়নি। আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে কমিটি করা যুক্তিসংগত ছিল। যেটা করা হয়নি। কিছু অপরিচিত মুখ, যাঁদের কখনো দেখা যায়নি, তড়িঘড়ি করে তাঁদের কমিটিতে পদে বসানোয় মনে হচ্ছে, ডাল মে কুচ কালা হ্যায়। এটা ঠিক হয়নি। এই কমিটি সংগঠন চালাতে পারবে না। এই কমিটি বাতিলের জোর দাবি জানাই।’
এদিকে গতকাল দুপুরে কুষ্টিয়া প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে জহুরুল আলম বলেন, ‘স্বেচ্ছাসেবক লীগের রাজনীতি করতে এসে হামলা-মামলার শিকার হতে হয়েছে। জেলহাজতে থাকতে হয়েছে বারবার। আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকেরা তাই আমাকে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব দিয়েছেন।’
পকেট কমিটি ও টাকা লেনদেনের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে জহুরুল আলম বলেন, ‘আমার ধারণা, আমার রাজনৈতিক সুনাম ক্ষুণ্ন করতে একটি মহল আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচারে নেমেছে। একটি চক্র অসত্য তথ্য দিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। টাকা দিয়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে, এটা যদি কেউ প্রমাণ দিতে পারে, তবে সব দায় আমার কমিটি নেবে।’
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন নতুন কমিটির সাধারণ সম্পাদক রকিবুল করিম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রবিউল ইসলাম প্রমুখ।