মঠবাড়িয়ায় আশ্রয়ণের শিশুদের রঙিন দিন, চালু হলো নতুন বিদ্যালয়

পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার বড়মাছুয়া গ্রামের আশ্রয়ণ প্রকল্পের শিশুদের জন্য বিদ্যালয় উদ্বোধনের পর শিশুদের সঙ্গে ছবি তোলেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহেদুর রহমানছবি: প্রথম আলো

পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার বড়মাছুয়া গ্রামের আশ্রয়ণ প্রকল্পের আশপাশে কোনো বিদ্যালয় না থাকায় সেখানকার শিশুরা পড়ালেখার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হতো। শিশুদের ভবিষ্যতের কথা বিবেচনা করে সেখানে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন করেছে উপজেলা প্রশাসন। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে পিরোজপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহেদুর রহমান বিদ্যালয়টি উদ্বোধন করেন।

উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আশ্রয়ণ প্রকল্প-২–এর আওতায় উপজেলার বড়মাছুয়া মৌজার ৪ একর খাসজমিতে ৯৮টি পাকা ঘর নির্মাণ করা হয়। ২ শতাংশ কৃষিজমিসহ একেকটি ঘরে আশ্রয় হয় শারীরিক প্রতিবন্ধী, দৃষ্টি প্রতিবন্ধী, বিধবা, ইমাম, গৃহকর্মী, দিনমজুর পরিবারের মানুষের। তবে তাঁদের সন্তানদের পড়াশোনার জন্য ওই এলাকায় প্রাথমিক বিদ্যালয় ছিল না। ফলে শিশুদের স্কুলযাত্রা অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। শিশুদের ভবিষ্যৎ বিবেচনা করে উপজেলা প্রশাসন থেকে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। উপজেলা শিক্ষা কমিটি সেখানে প্রাক্‌-প্রাথমিক, প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির কার্যক্রম শুরুর সিদ্ধান্ত নেয়। আশ্রয়ণ প্রকল্পের পাশে খাসজমিতে থাকা একটি পরিত্যক্ত পাকা ভবন সংস্কার করে সেখানে ‘বড়মাছুয়া মুজিব বর্ষ পল্লি প্রাথমিক বিদ্যালয়’ স্থাপন করা হয়। বিদ্যালয়টিতে পাঠদান চালু করতে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা দুজন শিক্ষককে প্রেষণে বিদ্যালয়ে পদায়ন করেন। প্রাক্‌–প্রাথমিকে ১৯ জন, প্রথম শ্রেণিতে ৭ জন ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে ৯ জন শিক্ষার্থী নিয়ে যাত্রা শুরু করেছে বিদ্যালয়টি।

গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে বড়মাছুয়া মুজিব বর্ষ পল্লি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের দেয়াল ও শ্রেণিকক্ষে বর্ণমালা ও প্রাকৃতিক নানা দৃশ্য আঁকা হয়েছে। শিশুশিক্ষার্থীদের সবার পরনে নতুন ইউনিফর্ম। বিদ্যালয় উদ্বোধনের পর জেলা প্রশাসক শিশুদের সঙ্গে ছবি তোলেন। এ সময় শিশুদের বেশ হাসিখুশি দেখা যায়।

বিদ্যালয়ের দেয়াল ও শ্রেণিকক্ষের দেয়ালে বর্ণমালা ও প্রাকৃতিক নানা দৃশ্য আঁকা হয়েছে
ছবি: প্রথম আলো

বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী মোসা. ফাতিমা বলে, ‘আমাদের এখান থেকে বিদ্যালয় অনেক দূরে। আরেক গ্রামে। তাই বিদ্যালয়ে সব সময় যাওয়া হতো না। এখন আর কষ্ট করে দূরের বিদ্যালয়ে যেতে হবে না, আমাদের বিদ্যালয়েই আসব।’

মঠবাড়িয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ঊর্মি ভৌমিক বলেন, এ এলাকায় কোনো প্রাথমিক বিদ্যালয় না থাকায় আশ্রয়ণ প্রকল্পে বসবাস করা পরিবারের সন্তানদের স্কুলযাত্রা অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। প্রাক্‌–প্রাথমিক, প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির শিশুশিক্ষার্থীদের নিয়ে বিদ্যালয়টি যাত্রা শুরু করল। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব শিক্ষার্থীকে নতুন পোশাক ও শিক্ষা উপকরণ দেওয়া হয়েছে।