পরে উপাচার্য গোলাম সাব্বির সাত্তার, সহ-উপাচার্য সুলতান-উল-ইসলাম, হুমায়ুন কবীরসহ প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ সিনেট ভবনের পাশে অবস্থান নিলে শিক্ষার্থীরা সেখানে তাঁদের ঘিরে রাখেন। সেখানে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে হ্যান্ডমাইকে বলা হয়, কোনো ঘটনার বিচার আলোচনা করা ছাড়া সম্ভব নয়। কিন্তু শিক্ষার্থীরা আরও বিক্ষোভে ফেটে পড়েন।

পরে বেলা ২টার দিকে ছাত্রলীগ নেতারা উপস্থিত হওয়ার পর উপাচার্যসহ প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিদের অবরুদ্ধ দশা থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এ সময় কিছু শিক্ষার্থী উপাচার্যের ভবনের গেট টপকে ভেতরে যাওয়ার চেষ্টা করেন। অনেকেই গেট ধরে ধাক্কা দেন। বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া, সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদসহ অন্য ছাত্রনেতারা তাঁদের নিবৃত্ত করেন।

এদিকে বেলা আড়াইটার দিকে শিক্ষার্থীরা বিক্ষিপ্তভাবে নানা জায়গায় অবস্থান নেন। দলবদ্ধ হয়ে কেউ কেউ প্যারিস রোডে বসে আছেন। কেউ শহীদুল্লাহ ও মমতাজউদ্দিন একাডেমিক ভবনের সামনে আমতলায় অবস্থান নিয়ে বসে ছিলেন। শিক্ষার্থীদের হাতে এ সময় লাঠিসোঁটাও দেখা গেছে।

শহীদুল্লাহ ভবনের সামনে আমতলায় ছাত্রলীগ, বাম সংগঠনের নেতা-কর্মীরা আলোচনায় বসেছেন। আলোচনা থেকে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার জন্য সুনির্দিষ্ট দাবিদাওয়া ঠিক করা হবে বলে জানিয়েছেন ছাত্রনেতারা।

সংঘর্ষের ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বেলা ৩টা ২০ মিনিটে সহ-উপাচার্য অধ্যাপক মো. সুলতান-উল-ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবন থেকে বের হন। তিনি বলেন, তাঁরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে কীভাবে শান্ত করতে পারেন, তা নিয়ে আলোচনা করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। শিগগির মামলা হবে।

এদিকে বেলা ৩টার পর ঢাকা–রাজশাহী মহাসড়ক থেকেও সরে গেছেন শিক্ষার্থীরা। আজ বেলা ১২টার দিকে একদল শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের এই সড়কে আগুন জ্বালিয়ে অবরোধ করেছিলেন।

গতকাল শনিবার বগুড়া থেকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে আসার পথে বাসের আসনে বসাকে কেন্দ্র করে চালক ও চালকের সহকারীর সঙ্গে এক শিক্ষার্থীর কথা-কাটাকাটি হয়। পরে বাসটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিনোদপুর ফটকে পৌঁছালে ওই শিক্ষার্থীর সঙ্গে আবার বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। এ সময় স্থানীয় এক দোকানদার এসে ওই শিক্ষার্থীর সঙ্গে তর্কে জড়ান। একপর্যায়ে উভয়ের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি হয়। পরে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা ঘটনাস্থলে জড়ো হয়ে ওই দোকানদারের ওপর চড়াও হন। একপর্যায়ে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জড়ো হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালান। তখন শিক্ষার্থীরাও তাঁদের পাল্টা ধাওয়া করেন। একপর্যায়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়।

দফায় দফায় এ সংঘর্ষে স্থানীয় মানুষের হামলায় দুই শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন। শিক্ষার্থীরা বিনোদপুর এলাকায় দোকানে ও পুলিশ বক্সে আগুন ধরিয়ে দেন। পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল ও রাবার বুলেট ছোড়ে।