‘এক সপ্তাহ থাকি সূর্য চোখ বন্ধ করোছে, খোলার নাম নাই’
কুড়িগ্রামে টানা ছয় দিন ধরে সূর্যের দেখা নেই। শীতের দাপটে কাবু হয়ে পড়েছেন দিনমজুর ও খেটে খাওয়া মানুষেরা। ঘন কুয়াশায় ব্যাহত হচ্ছে যান চলাচল ও স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। সেই সঙ্গে শীতজনিত রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে হাসপাতালে।
কুড়িগ্রামের রাজারহাট কৃষি আবহাওয়া দপ্তর সূত্রে জানা যায়, আজ রোববার সকালে কুড়িগ্রাম জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সপ্তাহ ধরে জেলার তাপমাত্রা ৯ থেকে ১৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ওঠানামা করছে। দিনের অধিকাংশ সময় আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকায় সূর্য উত্তাপ ছড়াতে না পারায় বেড়েছে শীতের তীব্রতা।
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার মোঘলবাসা ইউনিয়নের রিকশাচালক মো. জসিম উদ্দিন বলেন, ‘এক সপ্তাহ থাকি সূর্য চোখ বন্ধ করোছে, খোলার নাম নাই। রাত ও দিনে বৃষ্টির মতো শীত (কুয়াশা) পড়োছে। ঠান্ডায় হাত-পা হিম হয়া যায়। বাড়ির ছয়জন মানুষ রিকশার কামাইয়ের ওপর চলা খায়। এক দিন কামাই (কাজ) না করলে পরের দিন চুলাত আগুন জ্বলে না। আর কয়দিন ঠান্ডা থাকপে আল্লায় জানে। আমরা যারা দিন করে দিন খাই, সগার কষ্টে যাওছে।’
উত্তরের হিমেল হাওয়ায় তীব্র শীতে কাহিল হয়ে পড়েছেন শিশুসহ বিভিন্ন বয়সী মানুষ। শীতজনিত রোগেও কেউ কেউ আক্রান্ত হচ্ছেন। কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, কয়েক সপ্তাহ ধরে তীব্র ঠান্ডায় হাসপাতালে প্রতিদিন বাড়ছে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা। ১২ শয্যার ডায়রিয়া ওয়ার্ডের বিপরীতে ৫৭ শিশু রোগী ভর্তি আছে।
হাসপাতালটির আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) আতিকুর রহমান বলেন, কয়েক দিন থেকে তীব্র শীতে হাসপাতালে ডায়রিয়াজনিত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ডায়রিয়ায় আক্রান্ত ৩১ শিশুকে ভর্তি করা হয়েছে।
কুড়িগ্রামের পাঁচগাছী ইউনিয়নের জালালের মোড়ের দিনমজুর হোসেন আলী। তিনি বলেন, তীব্র ঠান্ডায় কাজে যেতে পারছেন না। অভাবের সংসার, কাজে যেতে না পারায় সমস্যায় পড়েছেন।
রাজারহাট কৃষি আবহাওয়া দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার বলেন, কয়েক দিন থেকে কুড়িগ্রামের তাপমাত্রা ওঠানামা করছে। এ রকম তাপমাত্রা আরও কয়েক দিন থাকতে পারে। বৃষ্টি না হওয়া পর্যন্ত তাপমাত্রা বাড়ার সম্ভাবনা কম। তবে এ মাসে একটি শৈত্যপ্রবাহ জেলার ওপর দিয়ে বয়ে যেতে পারে।