পটুয়াখালীতে রাতে তরুণীকে তুলে নিয়ে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ
পটুয়াখালীতে রাতের আঁধারে এক তরুণীকে (১৯) তুলে নিয়ে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে সদর উপজেলার একটি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ওই তরুণীর বাবা বাদী হয়ে পটুয়াখালী সদর থানায় মামলায় করেছেন। ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ইতিমধ্যে দুই যুবককে গ্রেপ্তার করেছে সদর থানার পুলিশ।
আজ বুধবার দুপুর ১২টার দিকে পটুয়াখালী ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ভুক্তভোগী তরুণীর সঙ্গে কথা হয়। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল রাত সাড়ে ৮টার দিকে নিজ বাড়ি থেকে রাস্তার অপর পাশে চাচার বাড়িতে যাচ্ছিলেন। এ সময় আগে থেকে ওত পেতে থাকা কয়েক যুবক মুখ চেপে তাঁকে তুলে নেন। পরে বাড়ির পাশের একটি খালের পারে (ছোট্ট নদী) নিয়ে তাঁকে ধর্ষণ করেন। এ ধর্ষণকাণ্ডে ৫ থেকে ৬ জন যুবক অংশ নেন। এর মধ্যে মিঠু ও মিরাজ নামের দুই যুবককে তিনি চিনেছেন বলে দাবি করেন। জড়িত ব্যক্তিরা অনেক আগে থেকে তাঁকে বিরক্ত ও নানাভাবে হয়রানি করতেন।
পটুয়াখালী ২৫০ শয্যা হাসপাতালের চিকিৎসা কর্মকর্তা সেঁজুতি সরকার প্রথম আলোকে বলেন, মঙ্গলবার রাতে এক তরুণীর মেডিকেল পরীক্ষা করেছেন। তবে বেশ কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষার রিপোর্ট অপেক্ষমাণ, যে কারণে ধর্ষণের বিষয়ে এখনই চূড়ান্ত মতামত দেওয়া সম্ভব নয়। তবে ওই তরুণী শারীরিকভাবে অসুস্থ বলে জানান তিনি।
তরুণীর বাবা মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল রাতে তাঁর মেয়ে তাঁদের বাড়ি থেকে তাঁর ভাইয়ের বাড়িতে থাকা তাঁর মায়ের (তরুণীর দাদি) সঙ্গে দেখা করতে যান। এ সময় ৫ থেকে ৬ জন যুবক তাঁর মেয়ের মুখ চেপে জোর করে তুলে নিয়ে নির্যাতন চালান। তরুণীর বাবা আরও বলেন, জড়িত ব্যক্তিরা অনেক আগে থেকেই কিছু কুরুচিপূর্ণ ছবি ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে তাঁর মেয়েকে নানাভাবে হয়রানি ও হুমকি দিতেন। এসব অভিযোগ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের জানিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু কোনো সুরাহা পাননি।
পটুয়াখালী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইমতিয়াজ আহম্মেদ প্রথম আলোকে বলেন, তরুণীকে উদ্ধার করে রাতেই পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দ্রুত সময়ে মেডিকেল পরীক্ষা সম্পন্ন করা হয়। প্রাথমিকভাবে ধর্ষণের সত্যতা রয়েছে বলে চিকিৎসক তাঁকে জানিয়েছেন।
ওসি আরও বলেন, ভুক্তভোগী তরুণী দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হওয়ার অভিযোগ করেছেন। ওই রাতেই ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে দুই যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার একজনের নাম মিঠু। অপরজনের নাম এই মুহূর্তে বলা সম্ভব নয়। এ ঘটনায় ভিকটিমের বাবা বাদী হয়ে পাঁচজনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা আরও তিনজনকে আসামি করে মামলা করেছেন। জড়িত অন্য ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করতে তিনি ও পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে অবস্থান করছে।
মামলার এজাহারভুক্ত পাঁচ আসামি হলেন মো. রাসেল মিঠু (৩০), মো. মিরাজ (২৮), মো. রানা চৌকিদার (৩০), মো. নাজমুল (২২) ও মো. শামীম মৃধা (২৫)। তাঁদের বিস্তারিত পরিচয় জানা যায়নি।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও প্রশাসন) সাজেদুল ইসলাম সজল জানান, এক তরুণীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে একজন জড়িত থাকার কথা পুলিশের কাছে স্বীকার করেছেন। জড়িত অন্য ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলমান রয়েছে।