বাগেরহাটে ৪টি আসন পুনর্বহালের দাবিতে সপ্তাহব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা, আগামীকাল হরতাল

বাগেরহাটের ৪টি সংসদীয় আসন পুনর্বহালের দাবিতে জরুরি সংবাদ সম্মেলন করেছে সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটি। আজ রোববার দুপুরে বাগেরহাট প্রেসক্লাব মিলনায়তনেছবি: প্রথম আলো

বাগেরহাটের চারটি সংসদীয় আসনের মধ্যে একটি কমিয়ে জেলায় তিনটি সংসদীয় আসন করে নির্বাচনী সীমানার চূড়ান্ত গেজেট প্রকাশের প্রতিবাদ এবং চারটি আসন বহাল রাখার দাবিতে জরুরি সংবাদ সম্মেলন করেছে সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটি। সম্মেলন থেকে হরতাল, অবরোধ ও বিক্ষোভ মিছিলসহ সপ্তাহব্যাপী কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। আজ রোববার দুপুরে বাগেরহাট প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটির নেতা–কর্মীরা।

কর্মসূচি অনুযায়ী, আজ বিকেলে ৯ উপজেলা ও তিন পৌরসভায় বিক্ষোভ; আগামীকাল সোমবার দিনব্যাপী হরতাল, মঙ্গলবার বিক্ষোভ মিছিল এবং বুধ–বৃহস্পতিবার আবারও হরতাল। অ্যাম্বুলেন্স, শিক্ষার্থীদের বহনকারী গাড়ি ও জরুরি সেবার যানবাহন হরতালের আওতামুক্ত থাকবে।

সংবাদ সম্মেলনে জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি সম্মিলিত কমিটির কো-কনভেনর এম এ সালাম, জেলা জামায়েতে ইসলামীর আমির মাওলানা রেজাউল করিম, সেক্রেটারি শেখ মোহাম্মদ ইউনুস আলী, বিএনপি নেতা শেখ মুজিবুর রহমান, জাকির হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি খান মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন জনমানুষের দাবি উপেক্ষা করে এই আসন বিন্যাস করেছে। মানুষকে সঙ্গে নিয়ে আমরা আন্দোলন শুরু করেছি।’

দীর্ঘদিন ধরে বাগেরহাটে চারটি আসন ছিল। গত ৩০ জুলাই আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাগেরহাটের চারটি আসনের মধ্যে একটি আসন কমিয়ে জেলায় তিনটি আসন করার প্রাথমিক প্রস্তাব দিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। এর পর থেকেই বাগেরহাট জেলাবাসী ক্ষোভে ফুঁসে ওঠেন। সব রাজনৈতিক দল একসঙ্গে সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটি গঠন করে। এরপর একের পর এক কর্মসূচি চলতে থাকে। চারটি আসন বহাল রাখার দাবিতে নির্বাচন কমিশনের শুনানিতে অংশ নেন জেলার বিভিন্ন দলের নেতা–কর্মীরা। তবে ৪ সেপ্টেম্বর নির্বাচন কমিশন শুধু আগের প্রস্তাবের সীমানা পরিবর্তন করে তিনটি আসন রেখে চূড়ান্ত গেজেট প্রকাশ করে।

সংবাদ সম্মেলনে জেলা জামায়েতের আমির মাওলানা রেজাউল করিম বলেন, ‘আমাদের কান্নার শব্দটি নির্বাচন কমিশনের কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করেছি। অধিকার ফিরে পাওয়ার জন্য শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি ঘোষণা করেছি। এরপরও যদি নির্বাচন কমিশনের বোধোদয় না হয়, তাহলে পরবর্তী সময়ে আরও কঠোর কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামব।’

জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এম এ সালাম বলেন, ‘চারটি আসন ফিরিয়ে আনার জন্য আমরা আন্দোলন–সংগ্রামের পাশাপাশি আইনি প্রক্রিয়ায় যাওয়ার জন্য একটি কমিটি গঠন করেছি। এই কমিটি দ্রুত সময়ের মধ্যে উচ্চ আদালতে যাবে।’

নির্বাচন কমিশনের চূড়ান্ত সীমানার গেজেট অনুযায়ী বর্তমান আসনের সীমানা: বাগেরহাট-১ ( বাগেরহাট সদর-চিতলমারী-মোল্লাহাট); বাগেরহাট-২ (কচুয়া-মোরেলগঞ্জ-শরণখোলা) ও বাগেরহাট-৩ (ফকিরহাট-রামপাল-মোংলা)।

১৯৬৯ সাল থেকে ৪টি আসনে নির্বাচন হয়ে আসছিল। তখনকার সীমানা: বাগেরহাট-১ (চিতলমারী-মোল্লাহাট-ফকিরহাট), বাগেরহাট-২ (বাগেরহাট সদর-কচুয়া), বাগেরহাট-৩ (রামপাল-মোংলা) বাগেরহাট-৪ (মোরেলগঞ্জ-শরণখোলা)।