অটোরিকশার পেছনে নছিমনের ধাক্কা, ভাই–বোনসহ নিহত ৩

দুর্ঘটনায় নিহত দুই শিশুর বাড়িতে স্বজন ও এলাকাবাসীর ভিড়। বৃহস্পতিবার সিরাজগঞ্জের তাড়াশের দক্ষিণপাড়ায়ছবি: প্রথম আলো

সিরাজগঞ্জের তাড়াশে সড়ক দুর্ঘটনায় একই পরিবারের দুই শিশুসহ তিনজন নিহত হয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে তাড়াশ পৌরসভার উলিপুর সেতুর পূর্ব পাশে খুঁটিগাছা-মহিষলুটি আঞ্চলিক সড়কে নছিমন ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার সংঘর্ষে এই মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।

নিহত ব্যক্তিরা হলেন তাড়াশ পৌর শহরের দক্ষিণপাড়ার রফিকুল ইসলামের ছেলে অটোরিকশার যাত্রী জনি (১০) ও মেয়ে তুবা (৮ মাস) এবং কোহিত গ্রামের বাসিন্দা অটোরিকশার আরেক যাত্রী হাইফোত হোসেন (৫২)। এ দুর্ঘটনায় রফিকুল ইসলামের স্ত্রী জান্নাতী খাতুন ও আরেক মেয়ে মালাইশা (৭) আহত হয়েছে।

পুলিশ ও এলাকাবাসীর বরাতে জানা গেছে, সকালে গরুবোঝাই নছিমন একটি অটোরিকশাকে পেছন থেকে ধাক্কা দেয়। এতে হাইফোত হোসেন, শিশু জনি ও তুবা গুরুতর আহত হয়। স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁদের উদ্ধার করে তাড়াশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে চিকিৎসক হাইফোত ও জনিকে মৃত ঘোষণা করেন। সিরাজগঞ্জ শহরের হাসপাতালে নেওয়ার পথে তুবা মারা যায়।

বেলা দেড়টার দিকে তাড়াশ দক্ষিণপাড়ায় রফিকুল ইসলামের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, আশপাশের মানুষ ভিড় করেছেন। কেউ শোকাহত পরিবারটিকে সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করছেন, কেউ নিহত শিশুদের জন্য কবর খোঁড়ার ও গোসল করানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

কান্নাজড়িত কণ্ঠে রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমি নিজ হাতে আমার ছেলেটাকে ব্রাশ করিয়ে দিয়েছি। হাত-মুখ ধুয়ে চুল আঁচড়ে দিয়েছি। নিজে স্ত্রী, ছেলে আর দুই মেয়েকে শ্বশুরবাড়ি যাওয়ার জন্য অটোরিকশায় তুলে দিয়েছিলাম। চালককে অনুরোধ করে বলি, ভাড়া বেশি দেব—শুধু সন্তানদের আর স্ত্রীকে মহাসড়ক পার করে ওই পাশে নামিয়ে দিতে হবে। কিন্তু ওই পর্যন্ত যেতেই পারল না। পথেই এক ছেলে আর এক মেয়ে মারা গেল। স্ত্রী আর এক মেয়ে আহত হয়ে কাতরাচ্ছে।’

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক মাজেদুর রহমান বলেন, হাসপাতালে আনার আগেই দুজন মারা যায়।

তাড়াশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান বলেন, মরদেহ স্বজনেরা নিয়ে গেছেন। এ বিষয়ে আইনি প্রক্রিয়ার প্রস্তুতি চলছে।