শ্রেণিকক্ষ–সংকট, মাঠে ও বারান্দায় পাঠদান 

শিক্ষকদের যেমন পাঠদান করতে অসুবিধা হচ্ছে, তেমনি শিক্ষার্থীদেরও পড়ালেখায় মনোযোগ নষ্ট হচ্ছে।

শ্রেণিকক্ষের সংকট থাকায় বিদ্যালয়ের বারান্দা ও মাঠে পাঠদান করা হচ্ছে। গত বৃহস্পতিবার বাগাতিপাড়ার নূরপুর মালঞ্চি উচ্চবিদ্যালয়ে
ছবি: প্রথম আলো

শ্রেণিকক্ষ–সংকটের কারণে নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার নূরপুর মালঞ্চি উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের খোলা মাঠে ও বারান্দায় পাঠদান করতে হচ্ছে। কখনো কখনো রোদ–বৃষ্টির কারণে মাঠে ও বারান্দাতেও পাঠদান বন্ধ থাকে।

নূরপুর মালঞ্চি উচ্চবিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৬৫ সালে। দীর্ঘ পথপরিক্রমায় এটি এলাকার ঐতিহ্যবাহী বিদ্যালয় হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। অথচ প্রয়োজনীয় অবকাঠামোর অভাবে বিদ্যালয়টি চরম কক্ষ–সংকটে ভুগছে। পর্যাপ্ত শ্রেণিকক্ষের অভাবে অনেক শিক্ষার্থীকে বিদ্যালয়ের খোলা মাঠে ও বারান্দায় বসে ক্লাস করতে হয়। রোদ ও বৃষ্টির কারণে শিক্ষার্থীদের মাঠে ও বারান্দাতেও কখনো কখনো ক্লাস করা সম্ভব হয়ে ওঠে না। নিরুপায় হয়ে শিক্ষার্থীদের একই শ্রেণিকক্ষে এদিক-ওদিক বসে ক্লাস করতে হয়। এতে শিক্ষকদের যেমন পাঠদান করতে অসুবিধা হয়, তেমনি শিক্ষার্থীদেরও পড়ালেখায় মনোযোগ নষ্ট হয়।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত চার শতাধিক শিক্ষার্থী রয়েছে। বিদ্যালয়ে তিনটি পৃথক ভবন রয়েছে। দুটি পাকা একতলা ভবন এবং অপরটি পুরোনো টিনশেড ভবন। পাকা ভবনের একটি কক্ষের একাংশে প্রধান শিক্ষক এবং অপর অংশে শিক্ষক ও অফিস সহকারী বসেন। অন্য দুটি কক্ষের একটিতে কম্পিউটার ল্যাবরেটরি, অপরটিতে সায়েন্স ল্যাবরেটরি করা হয়েছে। মূল্যবান যন্ত্রাংশ সেখানে রাখা আছে। অপর একটি ভবনের তিনটি কক্ষে অষ্টম, নবম ও দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের পাঠদান করা হয়। আর পুরোনো টিনশেডের প্রায় পরিত্যক্ত ভবনের চারটি কক্ষের একটিতে পাঠাগার, একটি মেয়েদের কমন রুম এবং অপর দুটিতে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির পাঠদান চলে।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাহাবুর হোসেন বলেন, সব মিলিয়ে পাঁচটি শ্রেণিকক্ষ আছে। কিন্তু এসএসসি পরীক্ষার্থীসহ ছয়টি শ্রেণির ক্লাস চালাতে গিয়ে সব সময় একটি শ্রেণির শিক্ষার্থীদের মাঠে বসাতে হয়। তা ছাড়া বিজ্ঞান ও মানবিকের পৃথক ক্লাসের সময় এবং ধর্মীয় ক্লাসের সময় শিক্ষার্থীদের একটি অংশকে বারান্দায় বা মাঠে বসতে হয়। গত বছর কক্ষ–সংকট সমাধানের জন্য শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরে আবেদন করা হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত সাড়া মেলেনি।

গত বৃহস্পতিবার দুপুরে ওই বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, বেলা সোয়া দুইটায় একই সঙ্গে আটটি ক্লাসে পাঠদান চলছে। এর মধ্যে পাঁচটি শ্রেণিকক্ষে ও পাঠাগারে পাঠদান চলছে। একই সময় নবম শ্রেণির গণিতের পাঠদান হচ্ছে মাঠে এবং হিন্দুধর্মের পাঠদান চলছে পাকা ভবনের বারান্দায়। জরাজীর্ণ টিনশেড ভবনেও শিক্ষার্থীদের ক্লাস চলছে।