লোকালয়ে এসে প্রাণ হারাল দলছুট হনুমানটি

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার কার্যালয়ে করা ময়নাতদন্তে হনুমানটির পিঠে ও মুখে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে
ছবি: সংগৃহীত

পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলায় হত্যার পর মাটিচাপা দেওয়া একটি হনুমানের মরদেহ উদ্ধার করেছে বন বিভাগ। গত রোববার রাতে উপজেলার চণ্ডীপুর গ্রামের মো. নূরুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তির বাড়ির পাশ থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। এরপর গতকাল সোমবার রাতে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে ইন্দুরকানি থানায় বন্য প্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা করেন স্থানীয় এক ব্যক্তি।

বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, যশোরের কেশবপুর উপজেলা থেকে বিভিন্ন সময়ে ফল ও সবজিবোঝাই ট্রাকে উঠে হনুমান দলছুট হয়ে পিরোজপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় চলে যায়। রোববার ইন্দুরকানি উপজেলার চণ্ডীপুর গ্রামের নিকাহ রেজিস্ট্রার মো. নূরুল ইসলামের বাড়িতে দুটি হনুমান গিয়ে ছোটাছুটি করছিল। হনুমানের আচরণে বিরক্ত হয়ে হনুমান দুটিকে তাড়ানোর জন্য নূরুল ইসলামসহ কয়েক ব্যক্তি লাঠিসোঁটা নিয়ে ধাওয়া করেন। লাঠির আঘাতে একটি পুরুষ হনুমান গুরুতর আহত হয়ে মারা যায়। এরপর রাতে নূরুল ইসলাম তাঁর বাড়ির পাশে মৃত হনুমানটি মাটিচাপা দেন। ঘটনাটি এলাকায় জানাজানি হলে গতকাল বিকেলে বন বিভাগের লোকজন খবর পেয়ে নূরুল ইসলামের বাড়ির পাশ থেকে মাটিচাপা দেওয়া মৃত হনুমানটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার কার্যালয়ে পাঠায়।

গতকাল রাতে এ ঘটনায় উপজেলার চণ্ডীপুর গ্রামের স্বপন পঞ্চায়েত বাদী হয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে স্থানীয় থানায় বন্য প্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন, ২০১২-এ মামলা করেছেন। এই আইনে সর্বোচ্চ তিন বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডের বিধান আছে।
উপজেলার চণ্ডীপুর গ্রামের বাসিন্দা ফোরকান উদ্দিন বলেন, ‘কয়েক দিন ধরে দুটি হনুমান দলছুট হয়ে চণ্ডীপুরে আসে। এরপর সেগুলোকে এলাকায় ঘোরাঘুরি করতে দেখেছি। রোববার একটি হনুমানকে হত্যার পর মাটিচাপা দেওয়ার খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে।’

এ বিষয়ে নূরুল ইসলামের বক্তব্য জানতে তাঁর মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি সাড়া দেননি।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার কার্যালয়ের ভেটেরিনারি সার্জন মো. মহিউদ্দিন বলেন, ‘হনুমানটির পিঠ ও মুখে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে আমরা বলেছি, আঘাতের কারণে হনুমানটির মৃত্যু হয়েছে।’

পিরোজপুর জেলা বন কর্মকর্তা নির্মল কুমার দত্ত বলেন, হনুমান হত্যা একটি অপরাধ। এ ঘটনায় স্থানীয় থানায় মামলা হয়েছে।

ইন্দুরকানি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. এনামুল হক বলেন, এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।