ভাঙ্গা থেকে যশোর রেলপথে পরীক্ষামূলক ট্রেন চলবে শনি ও রোববার
ঢাকা-যশোর রেলপথের ভাঙ্গা পর্যন্ত ইতিমধ্যে ট্রেন চলাচল করছে। ভাঙ্গা থেকে নড়াইল হয়ে যশোর অংশের রেলপথ নির্মাণের কাজও প্রায় শেষের দিকে। আগামীকাল শনিবার ও পরদিন রোববার ভাঙ্গা-নড়াইল-যশোর অংশে পরীক্ষামূলক ট্রেন চলাচল করবে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কনস্ট্রাকশন সুপারভিশন কনসালট্যান্ট (সিএসসি) বিভাগের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলকে রেলওয়ে নেটওয়ার্কের আওতায় আনতে এই রেলপথ নির্মাণ করা হচ্ছে। বাংলাদেশ ও চীনের যৌথ অর্থায়নে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ‘চায়না রেলওয়ে গ্রুপ’ (সিআরইসি) প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। ভাঙ্গা থেকে যশোর পর্যন্ত ব্রডগেজ ওই রেলপথে ভাঙ্গা, কাশিয়ানী এবং যশোরের পদ্মবিলা ও সিঙ্গিয়াতে রেলওয়ে জংশন থাকছে। এ ছাড়া নগরকান্দা, মুকসুদপুর, মহেশপুর, লোহাগড়া, নড়াইল এবং যশোরের জামদিয়া ও রূপদিয়াতে রেলস্টেশন হচ্ছে।
সিএসসির বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ৩০ ও ৩১ মার্চ (শনি ও রোববার) ভাঙ্গা রেলস্টেশন থেকে রূপদিয়া রেলস্টেশন পর্যন্ত উচ্চগতিতে (১২০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টায়) পরীক্ষামূলক ট্রেন চলাচল করবে। এ সময় রেললাইনের ওপর জনসাধারণের চলাচল সম্পূর্ণ নিষেধ এবং দণ্ডনীয় অপরাধ। এ সময় কোনো ধরনের দুর্ঘটনা এড়ানোর জন্য সংশ্লিষ্ট এলাকার জনসাধারণকে শিশু, বৃদ্ধ ও মানসিক প্রতিবন্ধী (যদি থকে) এবং গৃহপালিত প্রাণীকে নিজ নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করা হলো।
সেনাবাহিনীর সিএসসি বিভাগের অধীনে ইঞ্জিনিয়ারিং কোরের সদস্যরা এই রেলপথ নির্মাণের কাজ তত্ত্বাবধান করছেন। এ বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, সতর্কতামূলক বিজ্ঞপ্তিটি সংশ্লিষ্ট এলাকার জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনকে জানানো হয়েছে।
পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী আবু ইউছুফ মো. শামীম আজ শুক্রবার প্রথম আলোকে বলেন, ভাঙ্গা-নড়াইল-যশোর অংশের নির্মাণকাজ শেষের পথে। কাজের অংশ হিসেবে দুই দিন ভাঙ্গা থেকে যশোর পর্যন্ত বিভিন্ন গতিতে ট্রেন চালিয়ে নির্মাণ অবস্থা পরীক্ষা করা হবে। আগামী জুনের মধ্যেই আশা করা যাচ্ছে এ রুটে ট্রেন চলবে।
রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা-যশোর রেলপথের ভাঙ্গা পর্যন্ত ইতিমধ্যে ট্রেন চলাচল করছে। প্রকল্পের শেষ অংশ ভাঙ্গা থেকে যশোর। এই অংশের দৈর্ঘ্য ৮৭ দশমিক ৩২ কিলোমিটার। প্রকল্পটি শেষের মেয়াদ ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত। মাঠপর্যায়ে প্রকল্পটির কাজ শুরু হয়েছিল ২০১৯ সালে। ২০১৬ সালের ৩ মে একনেকে ‘পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্প’ নামে এটির অনুমোদন হয়। অনুমোদনের সময়ে পুরো প্রকল্পটির প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছিল ৩৪ হাজার ৯৮৮ কোটি টাকা। বর্তমানে এই প্রকল্পের ব্যয় দাঁড়িয়েছে ৩৯ হাজার ২৪৬ কোটি টাকা। প্রকল্পটি সরকারের অগ্রাধিকার তালিকাভুক্ত (ফাস্ট ট্র্যাক)।