ভৈরবে নৌকাডুবির ঘটনায় সবার লাশ উদ্ধার, একই পরিবারের চারজন

ভৈরবে বাল্কহেডের ধাক্কায় ডুবে যাওয়া পর্যটকবাহী নৌকায় ছিলেন ভৈরব হাইওয়ে থানার কনস্টেবল সোহেল রানাসহ তাঁর স্ত্রী ও দুই সন্তান। নৌকাডুবিতে তাদের সবাই মারা যাওয়ায় এই ছবি এখন শুধুই স্মৃতিছবি: সংগৃহীত

কিশোরগঞ্জের ভৈরবে মেঘনা নদীতে বাল্কহেডের ধাক্কায় পর্যটকবাহী নৌকাডুবির ঘটনায় নিখোঁজ শিশুটির লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ সোমবার দুপুরে দুর্ঘটনাস্থলের কিছুটা দূরে তার লাশ পাওয়া যায়। এর ফলে গত চার দিনে আটটি লাশ উদ্ধার করা হলো। ওই দুর্ঘটনায় মারা গেছেন মোট ৯ জন। এর মধ্যে মা–বাবা, দুই শিশুসন্তানসহ একই পরিবারের চারজন।

সর্বশেষ উদ্ধার হওয়ায় শিশু রাইসুল ইসলাম (৪) ভৈরব হাইওয়ে থানার কনস্টেবল সোহেল রানার ছেলে। ওই দুর্ঘটনায় সোহেল রানা, তাঁর স্ত্রী মৌসুমী বেগম (২৫) ও ইভা বেগম (৭) মারা গেছেন।

ভৈরব নৌ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুজ্জামান বলেন, শিশু রাইসুল ইসলামের লাশ উদ্ধারের মধ্য দিয়ে উদ্ধারকাজ শেষ হলো। যথাযথ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

নৌ পুলিশ সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার সন্ধ্যায় দুর্ঘটনার পর পরদিন থেকে বাংলাদেশ অভ্যন্তরণী নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ), ফায়ার সার্ভিস ও নৌ পুলিশের সমন্বয়ে উদ্ধারকাজ চলে। আজ সকাল সাতটার দিকে সোহেল রানা ও বেলন দের লাশ দুর্ঘটনাস্থল থেকে কিছুটা দূরে ভেসে ওঠে। আরও কিছুটা দূরে দুপুরে ভেসে ওঠে রাইসুলের লাশ।

এর আগে উদ্ধার হয় মৌসুমী বেগম (২৫), ইভা বেগম, বেলন দের শ্যালকের স্ত্রী রুপা দে (২৬), সম্বন্ধীর মেয়ে আরাদ্ধা (১১), নরসিংদীর বেলাব উপজেলার দড়িগাও গ্রামের কলেজপড়ুয়া আনিকা বেগম ও ভৈরব পৌর শহরের কমলপুর এলাকার স্বপন মিয়ার মেয়ে সুবর্ণা বেগমের (২০) লাশ।

এদিকে বাল্কহেডের সুকানি ও ইঞ্জিনচালকের বিরুদ্ধে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ থানায় হওয়া মামলার তদন্ত শুরু হয়েছে। তবে এখনো অভিযুক্তদের নাম–পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি। গত শনিবার দ্রুত ও বেপরোয়া গতিতে চালিয়ে দুর্ঘটনা ঘটানোর অভিযোগ এনে মামলাটি করেন কনস্টেবল সোহেল রানার বাবা মো. আলীম।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মেঘনা নদীতে পাশাপাশি দুটি রেল ও একটি সড়ক সেতু রয়েছে। তিনটি সেতুকে ঘিরে ভৈরব প্রান্তে প্রতিদিন অসংখ্য দর্শনার্থীর আগমন ঘটে। ঘাটে বেশ কয়েকটি পর্যটকবাহী নৌকা রয়েছে। প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ নৌকার মাধ্যমে মেঘনা নদীতে ঘুরে বেড়ান। বিশেষ করে শুক্রবার পর্যটকদের সংখ্যা বেড়ে যায়। গত শুক্রবার বিকেল সোয়া পাঁচটার দিকে একটি নৌকাতে ১৫–১৮ জন আরোহী হয়। সন্ধ্যা ছয়টার দিকে বাল্কহেডের ধাক্কায় নৌকাটি ডুবে যায়।