ওসিকে কনুই দিয়ে আঘাত করা সেই এএসআই চাকরিচ্যুত

এএসআই সন্তু শীল
ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের কোতোয়ালি থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুল কবিরকে কনুইয়ের ধাক্কা দিয়ে আহত করার ঘটনায় এক সহকারী উপপরিদর্শককে (এএসআই) চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। তাঁর নাম সন্তু শীল। জাহিদুল কবির বর্তমানে নগরের চান্দগাঁও থানায় ওসি হিসেবে কর্মরত আছেন।

সন্তু শীল শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর দেহরক্ষী ছিলেন। গত ৩ এপ্রিল তাঁকে চাকরিচ্যুত করা হলেও বিষয়টি জানা যায় গত রোববার।

নগর পুলিশের উপকমিশনার (সদর) মো. আবদুল ওয়ারীশ আজ সোমবার প্রথম আলোকে বলেন, ওসির সঙ্গে এএসআই সন্তু ঔদ্ধত্যপূর্ণ ও অপেশাদারসুলভ আচরণ করেছেন। ঘটনার পর তদন্ত কমিটি গঠিত হয়। এরপর বিভাগীয় মামলা হয়। মামলায় এটি প্রমাণিত হওয়ায় এএসআই সন্তুকে চাকরি থেকে অপসারণ করা হয়েছে।

মো. আবদুল ওয়ারীশ আরও বলেন, চাকরি থেকে অপসারণের বিরুদ্ধে এএসআই সন্তু শীল এখন নগর পুলিশ কমিশনারের কাছে আপিল করতে পারেন। এটি নাকচ হলে প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালে যেতে পারেন।

প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত  বছরের ২০ এপ্রিল ঈদসামগ্রী বিতরণ করতে নগরের পাথরঘাটার ফিরিঙ্গীবাজার এলাকায় যান চট্টগ্রাম-৯ আসনের সংসদ সদস্য তৎকালীন উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী। এ সময় তাঁর পাশে ছিলেন ওসি জাহিদুল। একপর্যায়ে পেছনে থেকে বাঁ হাতের কনুই দিয়ে তাঁকে সজোরে ধাক্কা দেন এএসআই সন্তু শীল। সঙ্গে সঙ্গে উপমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন ওসি। এ সময় এএসআই এবং ওসি তর্কে জড়ালে তাঁদের কক্ষের ভেতরে নিয়ে যান মহিবুল হাসান চৌধুরী। ঘটনার দিনই ওসি জাহিদুল কোতোয়ালি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। একই সঙ্গে বিষয়টি নগর পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের লিখিতভাবে জানান। এরপর এএসআই সন্তু শীলকে দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন পাওয়ার পর তাঁকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, এর আগেও এএসআই সন্তু শীলের বিরুদ্ধে পুলিশের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ রয়েছে। ২০১৯ সালের ১৬ মে তাঁর বিরুদ্ধে বাকলিয়া থানায় জিডি করেছিলেন তৎকালীন ওসি মোহাম্মদ নেজাম উদ্দিন। সোনার বার ছিনতাইয়ে জড়িত থাকার অভিযোগও উঠেছিল সন্তু শীলের বিরুদ্ধে। ২০১৫ সালের ২১ সেপ্টেম্বর ১০২ ভরি সোনা ছিনতাইয়ের অভিযোগ এনে কোতোয়ালি থানায় তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন এক স্বর্ণ ব্যবসায়ী। ওই ঘটনার পরও তাঁকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছিল।