রাজৈরে র্যাব পরিচয়ে ছিনতাই করতে গিয়ে গণপিটুনির শিকার, আহত ৪
মাদারীপুরের রাজৈরে র্যাব পরিচয় দিয়ে পাঁচ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের অভিযোগে চার ছিনতাইকারীকে পিটুনি দিয়েছেন স্থানীয় লোকজন। পরে আহত ছিনতাইকারীদের পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার কদমবাড়ি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ সময় ছিনতাইকাজে ব্যবহৃত একটি প্রাইভেট কার, হ্যান্ডকাপ ও ২ লাখ ৯২ হাজার টাকা উদ্ধার করেছে পুলিশ।
চার ছিনতাইকারী হলেন শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার গোপালপুর গ্রামের জব্বার খার ছেলে আলমগীর খান (৩৫), পটুয়াখালীর গলাচিপা চরকাজল গ্রামের নুর ইসলামের ছেলে রাসেল মাতুব্বর (৩৪), মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার দত্তপাড়া গ্রামের বাবু মাতুব্বরের ছেলে জসিম মাতুব্বর (৩০) ও কালকিনি উপজেলার আলীনগর গ্রামের মমিন সরদারের ছেলে আয়ুবালি সরদার (৪৫)। আহত চারজনকে রাজৈর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, উপজেলার নারায়ণপুর এলাকার গিয়াস শেখ (৪০) ও তাঁর শাশুড়ি মিনারা বেগম (৫০) বেলা ১১টার দিকে টেকেরহাট বন্দরের উত্তরা ব্যাংক থেকে ৫ লাখ টাকা উত্তোলন করেন। টাকা তুলে তাঁরা একটি ভ্যানে করে বাড়িতে ফিরছিলেন। ভ্যানটি উপজেলার বৌলগ্রামের কাছাকাছি পৌঁছালে একটি সাদা প্রাইভেট কার ভ্যানের গতি রোধ করে। পরে কার থেকে চারজন ব্যক্তি নিজেদের র্যাব পরিচয় দিয়ে গিয়াস ও মিনারার সঙ্গে কথা বলতে শুরু করেন। এ সময় গিয়াস ও মিনারার কাছে ইয়াবা আছে বলে ওই চার ব্যক্তি তাঁদের তল্লাশি শুরু করেন।
একপর্যায়ে তাঁদের জোর করে ওই গাড়িতে তোলা হয়। গাড়িটি চলতে শুরু করলেও গিয়াস ও তাঁর শাশুড়ি চিৎকার শুরু করেন। তাঁদের চিৎকার শুনে স্থানীয় লোকজনের সন্দেহ হলে তাঁরা গাড়ির পেছনে ধাওয়া শুরু করেন। কদমবাড়ি এলাকায় গিয়ে স্থানীয় লোকজন গাড়িটি থামাতে সক্ষম হোন।
পরে স্থানীয় লোকজন র্যাব পরিচয় দেওয়া চারজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। এ সময় তাঁদের গতিবিধি সন্দেহজনক মনে হলে গাড়ির চালকসহ চারজনকে আটক করে পিটুনি দেন স্থানীয় লোকজন। পরে খবর পেয়ে রাজৈর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে আহত চার ছিনতাইকারীকে আটক করে রাজৈর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী সবুজ বালা প্রথম আলোকে বলেন, ‘বৌলগ্রাম থেকে মোবাইলে খবর পেয়েই আমরা কয়েকজন মিলে প্রাইভেট কারটি কদমবাড়ি বাজারে থামানোর জন্য সিগন্যাল (সংকেত) দিই। এ সময় সিগন্যাল না মেনে কারটি দ্রুত বেগে চলে যাওয়ার চেষ্টা করে। পরে মোটরসাইকেল দিয়ে ধাওয়া করে কারটি থামানো হয়। তাঁদের কাছে র্যাবের পরিচয়পত্র দেখতে চাইলে তাঁরা টালবাহানা শুরু করেন। পরে লোকজন তাঁদের ঘিরে ধরলে তাঁরা ভয়ে সব স্বীকার করেন।’
রাজৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আলমগীর হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, র্যাব পরিচয় দেওয়া ওই চার ব্যক্তি পেশাদার ছিনতাইকারী। তাঁরা দীর্ঘদিন ধরে এভাবে প্রতারণা করে আসছেন। আজ তাঁরা ছিনতাই করতে গেলে স্থানীয় লোকজন চারজনকে মারধর করে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছেন। এ সময় ছিনতাইয়ের কাছে ব্যবহৃত প্রাইভেট কারটিও স্থানীয় লোকজন ভাঙচুর করেছেন। এই চক্রের অন্যদেরও ধরার চেষ্টা চলছে। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদ শেষে মামলা করা হবে।