কুমারখালীতে নৌকার কর্মীদের ওপর হামলার পর সংঘর্ষ, আটক ১০

কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মী–সমর্থকদের হামলায় আহতদের কুমারখালী হাসপাতালে নেওয়া হয়
ছবি: প্রথম আলো

কুষ্টিয়া-৪ (কুমারখালী-খোকসা) আসনের নৌকার প্রার্থী সেলিম আলতাফ জর্জের সমর্থকদের মিছিলে অতর্কিত হামলার ঘটনা ঘটেছে। এরপর উভয় পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়েছে। শুক্রবার রাত সাড়ে আটটার দিকে কুমারখালী উপজেলার যদুবয়রা ইউনিয়নের জয়বাংলা বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ সময় অন্তত পাঁচজন আহত হয়েছেন। ঘটনার পরপরই নির্বাচনীয় এলাকার দায়িত্বরত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আমিরুল আরাফাত ও কুষ্টিয়া অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম ও মিডিয়া) পলাশ কান্তি নাথ সেখানে যান। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জনকে আটক করে থানায় নিয়েছে।

নৌকার সমর্থকেরা অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী (ট্রাক প্রতীক) ও সাবেক সংসদ সদস্য আবদুর রউফের কর্মীরা তাঁদের মিছিলে হামলা করেছেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার সন্ধ্যার দিকে কুমারখালীর যদুবয়রা ইউনিয়নে বহলবাড়িয়া এলাকায় স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুর রউফের একটি নির্বাচনী ক্যাম্প ভাঙচুর করা হয়। এ খবর ইউনিয়নে ছড়িয়ে পড়ে। উভয় পক্ষের কর্মী-সমর্থকেরা জয়বাংলা মোড় এলাকায় জড়ো হন। সেখানে নৌকার প্রার্থীর কয়েকজন সমর্থক মিছিল বের করলে তাঁদের ওপর অতর্কিত হামলা হয়। এতে কয়েকজন আহত হন। পরে সংঘর্ষ বাধে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত পাঁচজন আহত হন। আহত ব্যক্তিরা হলেন নৌকার প্রার্থীর সমর্থক বাশার, আরাফাত, শাহজাহান এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থক বিল্লাল হোসেন ও বাপ্পী। তাঁদের কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতাল ও কুমারখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনার পরপরই সেখানে বিপুলসংখ্যক পুলিশ সদস্য যান। অভিযান চালিয়ে অন্তত ১০ জনকে আটক করে থানায় নেওয়া হয়।

নৌকার প্রার্থী ও বর্তমান সংসদ সদস্য সেলিম আলতাফ জর্জ রাতে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার কয়েকজন কর্মীর ওপর হামলা করা হয়েছে। তাঁরা আহত হয়েছেন। ধারণা করছি, স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকেরা এ ঘটনা ঘটিয়েছে। পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবে। বিএনপি-জামায়াত স্বতন্ত্র প্রার্থীর ওপর ভর করে হয়তো এসব ঘটনা ঘটাচ্ছে। এভাবে চোরাগোপ্তা হামলা চালিয়ে নৌকার বিজয় ঠেকানো যাবে না। আহত ব্যক্তিদের সব রকম চিকিৎসাসেবা দিচ্ছি আমি। তাঁরা আইনগত ব্যবস্থা নেবেন। আমি কোনো অভিযোগ দেব না।’

স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুর রউফের নির্বাচনী কাজে দায়িত্বরত প্রতিনিধি সালেহীন সেলিম প্রথম আলোকে বলেন, ‘সন্ধ্যায় আমাদের একটি নির্বাচনী ক্যাম্প ভাঙচুর করা হয়। পরে এ খবর ছড়িয়ে পড়লে জয়বাংলা বাজারে সংঘর্ষ বাধে। সেখানেও আমাদের একটি ক্যাম্প ভাঙা হয়। আমাদেরও দুজন কর্মী আহত হয়েছেন।’

কুমারখালী পৌরসভার প্যানেল মেয়র ও নৌকার কর্মী রফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ন্যক্কারজনক হামলা হয়েছে। একজন গুরুতর জখম হয়েছেন। নির্বাচনী ক্যাম্প নিজেরা ভেঙে দায় চাপানোর চেষ্টা করে যাচ্ছে।

কুমারখালী উপজেলায় দায়িত্বরত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও কুমারখালী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আমিরুল আরাফাত প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনার পরপরই সেখানে যান। আধা ঘণ্টার মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা হয়েছে। ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ৯-১০ জনকে আটক করা হয়েছে।

কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ (ক্রাইম ও মিডিয়া) পলাশ কান্তি নাথ প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি ঘটনাস্থলে আছি। সবকিছু স্বাভাবিক রয়েছে। আহত ব্যক্তিদের হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তাঁরা আশঙ্কামুক্ত বলে জেনেছি।’