দুর্নীতি ও পাচারের কারণে দেশ আজ শ্রীলঙ্কার দিকে যাচ্ছে: সংসদ সদস্য হারুন

নীলফামারীর ডোমারে বিএনপির সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য দিচ্ছেন দলের যুগ্ম মহাসচিব সংসদ সদস্য হারুন অর রশিদ। শনিবার বিকেলে পৌর শহরের দেবীগঞ্জ সড়কের জুটমিল মাঠে
ছবি: প্রথম আলো

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সংসদ সদস্য হারুন অর রশিদ বলেছেন, সরকার বড় বড় কথা বলে দেশকে ইউরোপ-আমেরিকার সঙ্গে তুলনা করেছিল। অথচ ব্যাপক দুর্নীতি ও অর্থ পাচারের কারণে দেশ আজ শ্রীলঙ্কার দিকে যাচ্ছে। ভবিষ্যতে আরও অবনতির দিকে যাবে। তাই সরকারকে দ্রুত পদত্যাগ করে নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে।

জ্বালানি তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও ভোলায় গুলিতে দুই নেতা নিহত হওয়ার প্রতিবাদে নীলফামারীর ডোমার উপজেলায় আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। আজ শনিবার বিকেলে পৌর শহরের দেবীগঞ্জ সড়কের জুট মিল মাঠে এ সমাবেশের আয়োজন করে উপজেলা ও পৌর বিএনপি।

হারুন অর রশিদ বলেন, ২০০৯ সালে বিরোধী দলের চিফ হুইপ নির্বাচিত সংসদ সদস্য জয়নুল আবদিন ফারুককে সংসদ ভবনের সামনে যাঁরা নির্মমভাবে নির্যাতন করেছিলেন, বর্তমান সরকার তাঁদের পুরস্কৃত করেছেন। একজন সংসদ সদস্যকে পিটিয়ে তাঁরা নাকি ভালো কাজ করেছেন।

ছাত্রলীগ, আওয়ামী লীগের উদ্দেশে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘সময় কিন্তু ঘনিয়ে এসেছে। গত ১৩ বছরে আপনারা অনেক লুটপাট, চুরিচামারি করেছেন। শুধু ভোট নয়, বাংলাদেশের সম্পদ চুরি করে বিদেশে পাঠানো হচ্ছে। গোটা বাংলাদেশকে মাদকের রাজ্য বানিয়েছেন। তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া আজ কারাবন্দী। ক্যাসিনো–সম্রাট, মাদক–সম্রাট, যাঁর বিরুদ্ধে ৩০০ কোটি টাকা বিদেশে পাচারের অভিযোগ আছে, চার্জশিট দিয়েছে, তিনি আজ মুক্ত। তিনি শেখ মুজিবের প্রতিকৃতিতে দলবল নিয়ে গিয়ে ফুলের মালা দিচ্ছেন। তাঁরা আবার বুক ফুলিয়ে বলেন, “আমি আওয়ামী লীগ করি।” তাঁদের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কোনো মন্তব্য নেই।’

হারুন অর রশিদ আরও বলেন, ‘পররাষ্ট্রমন্ত্রী কয়েক দিন আগে বললেন, “আমি ভারতে গিয়ে বলে এসেছি, শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় রাখতে হবে।” আর আওয়ামী লীগের মুখপাত্র ওবায়দুল কাদের পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে বলে দিলেন, “আওয়ামী লীগ থেকে তাঁকে কোনো দায়িত্ব দেওয়া হয়নি।” আপনি দায়িত্ব দেওয়ার কে? দায়িত্ব দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। দায়িত্ব দিয়ে বলেছেন, “তুমি ভারতে গিয়ে বলো, আমাকে যেন আবার ক্ষমতায় রাখে।” প্রধানমন্ত্রী তো এখন পর্যন্ত একবারও বলেননি, “আমি তাঁকে এ কথা বলতে বলিনি।” সত্য চাপা থাকে না। সত্য কখনো লুকানো যায় না। সত্য সব সময় প্রকাশিত হবেই।’

উপজেলা বিএনপির সভাপতি মো. রেয়াজুল ইসলামের সভাপতিত্বে সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন রংপুর বিভাগীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল খালেক, দিনাজপুর পৌরসভার মেয়র সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলম, জেলা বিএনপির সভাপতি আ খ ম আলমগীর সরকার, সাধারণ সম্পাদক জহুরুল আলম, উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. আক্তারুজ্জামান, পৌর বিএনপির সভাপতি মো. আনিছুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক মো. মোজাফ্ফর আলী, জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সাহাদাত হোসেন প্রমুখ।