প্রকৌশলীদের প্রতি বৈষম্য নিরসনে তিন দফা দাবিতে রুয়েট শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ সমাবেশ
বিএসসি প্রকৌশলীদের প্রতি বৈষম্য নিরসনে তিন দফা দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) শিক্ষার্থীরা। আজ বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রুয়েটের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে থেকে তাঁরা বিক্ষোভ মিছিল বের করেন।
মিছিলটি রুয়েটের প্রধান ফটক দিয়ে বের হয়ে ঢাকা–রাজশাহী মহাসড়কের তালাইমারী মোড়ে অবস্থান নেয়। এতে সড়কের যান চলাচল সীমিত হয়ে পড়ে। পরে বেলা দেড়টার দিকে শিক্ষার্থীরা সড়ক ছেড়ে দিয়ে ক্যাম্পাসে চলে আসেন। এরপর যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
বিক্ষোভ মিছিলে শিক্ষার্থীরা ‘আমার সোনার বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই’, ‘কোটা না মেধা, মেধা, মেধা’, ‘কোটার নামে বৈষম্য, চলবে না, চলবে না’, ‘এই মুহূর্তে দরকার, কোটাপ্রথার সংস্কার’ প্রভৃতি স্লোগান দেন।
সমাবেশে শিক্ষার্থীরা বক্তব্য দেওয়া শুরু করলে বৃষ্টি শুরু হয়। বৃষ্টির মধ্যে ভিজে ভিজে শিক্ষার্থীরা বক্তব্য দিতে থাকেন। তাঁরা বলেন, গত বছরের ৫ আগস্টের পর বাংলাদেশে কোনো কোটা থাকতে পারে না। কিন্তু ডিপ্লোমা ডিগ্রিধারীদের জন্য ৩৩ শতাংশ কোটা রাখা হয়েছে, সেটি অবশ্যই বাতিল করতে হবে। তাঁরা অবিলম্বে এ কোটার অবসান চান। এই বৈষম্য দূর করা গেলে প্রকৌশল পেশায় মেধাভিত্তিক নিয়োগ ও পদোন্নতি নিশ্চিত হবে।
এ সময় শিক্ষার্থীরা তিন দফা দাবি তুলে ধরেন। দাবিগুলো হলো ইঞ্জিনিয়ারিং নবম গ্রেড (অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার) বা সমমান পদে প্রবেশের জন্য সবার জন্য পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করতে হবে এবং অবশ্যই বিএসসি ডিগ্রি থাকতে হবে। কোনো কোটা বা সমমান পদ তৈরি করে পদোন্নতির সুযোগ দেওয়া যাবে না। টেকনিক্যাল দশম গ্রেড (সাব অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার) বা সমমান পদ সবার জন্য উন্মুক্ত রাখতে হবে, যাতে ডিপ্লোমা ও বিএসসি ডিগ্রিধারী উভয়েই চাকরির পরীক্ষায় সুযোগ পান। বর্তমানে এই পদে প্রায় ১০০ শতাংশ কোটা শুধু ডিপ্লোমা ডিগ্রিধারীদের জন্য সংরক্ষিত। বিএসসি ডিগ্রি ছাড়া কেউ ‘ইঞ্জিনিয়ার’ পদবি ব্যবহার করতে পারবেন না, এ জন্য আইন পাস করে গেজেট প্রকাশ করতে হবে।
তালাইমারী মোড়ে শিক্ষার্থীদের দাবির সঙ্গে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য দেন রুয়েটের ছাত্রকল্যাণ দপ্তরের পরিচালক অধ্যাপক মো. রবিউল ইসলাম সরকার। তিনি বলেন, ‘জুলাই আন্দোলন হয়েছিল কোনো ধরনের কোটার বৈষম্য থাকবে না বলে। কিন্তু আজ আমরা দেখছি, প্রকৌশলের বেশ কিছু ক্ষেত্রে এখনো কোটা নামক অবিচার রেখে দেওয়া হয়েছে। আজ অধিকার আদায়ের জন্য রাস্তায় আসার দরকার ছিল না। কিন্তু এই কোটা রেখে দিয়ে আমাদের ছাত্রদের রাস্তায় নামতে বাধ্য করা হয়েছে।’ তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টাসহ সবার প্রতি ছাত্রদের দাবি মেনে নেওয়ার অনুরোধ জানান।