চাঁদপুরের মতলব উত্তরে সালিসে কিলঘুষিতে সাবেক ইউপি সদস্য নিহত

মরদেহ
প্রতীকী ছবি

চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলায় জমিসংক্রান্ত বিরোধ মেটাতে বসা এক সালিস বৈঠকে একপক্ষের কিলঘুষিতে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। আজ মঙ্গলবার বেলা দুইটায় উপজেলার ফরাজীকান্দি ইউনিয়নের মাইজকান্দি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত ব্যক্তির নাম সুরুজ আলী (৬৪)। তিনি উপজেলার ফরাজীকান্দি ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য। ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মাইজাকান্দি গ্রামের বাসিন্দা মো. সোলেমান ও মো. কবির হোসেনের পরিবারের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বাড়ির জায়গার মালিকানা নিয়ে বিরোধ চলছে। বিষয়টি সুরাহার জন্য একাধিকবার সালিস বৈঠক হলেও কাজ হয়নি। আজ দুপুরে বিরোধ মেটাতে পুনরায় সালিস বৈঠকের আয়োজন করা হয়। উভয় পক্ষ বৈঠকটির আয়োজন করে। এতে সুরুজ আলীসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।

পুলিশ, পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানায়, সালিস বৈঠক চলার একপর্যায়ে সোলেমান ও কবিরের পক্ষের লোকজনের মধ্যে হাতাহাতি ও মারামারি শুরু হয়। তখন সুরুজ আলী কবির হোসেনকে থাপ্পড় মারেন। এতে ক্ষিপ্ত হন কবির হোসেন। পরে কবির ও তাঁর লোকজন সুরুজ আলীকেও পাল্টা কিলঘুষি দিতে থাকেন। এতে তিনি গুরুতর আহত হন এবং অজ্ঞান হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। এ সময় সেখানে উপস্থিত লোকজন ও স্বজনেরা সেখান থেকে সুরুজকে উদ্ধার করে মতলব দক্ষিণ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে নিয়ে যান। পরে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

নিহত সুরুজ আলী মাইজকান্দি গ্রামের বাসিন্দা। সুরুজ আলীর নিকটাত্মীয় মো. মোস্তফা ও এলাকার বাসিন্দা মো. সেলিম বলেন, ওই সালিস বৈঠকে তাঁরাও উপস্থিত ছিলেন। কবির হোসেন ও তাঁর লোকেরা সুরুজ আলীকে বেধড়ক কিলঘুষি মারেন। কিলঘুষিতে তিনি ঘটনাস্থলেই মারা যান। বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয়েছে। পুলিশ আসার আগেই স্থানীয় লোকজন কবির হোসনকে পিটুনি দেন।

উদ্দেশ্যমূলকভাবেই কবির ও তাঁর লোকেরা সুরুজ আলীকে হত্যা করেছেন বলে অভিযোগ তাঁর পালিত পুত্র জিয়াউর রহমানের। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন তিনি। এ অভিযোগের বিষয়ে কবির হোসেনের মুঠোফোন নম্বরে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে সংযোগ বন্ধ পাওয়া যায়। স্থানীয় সূত্র জানায়, পিটুনি খাওয়ার পর এলাকা ছেড়েছেন কবির।

এ বিষয়ে মতলব উত্তর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ শহীদ হোসেন বলেন, ঘটনার পরে সেখানে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় তাঁর থানায় এখনো লিখিত অভিযোগ বা মামলা হয়নি। অভিযোগ বা মামলা প্রক্রিয়াধীন। ময়নাতদন্তের জন্য ওই ব্যক্তির লাশ চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। প্রতিবেদন পাওয়ার পর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যাবে। ঘটনার তদন্ত চলছে।